বাংলাদেশের কোচিংয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সে কাল আর এ কালের মধ্যে বিরাট একটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১৪ সালে জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। এবার তিনি কৌশল বদলে জাতীয় দলকে সাজাচ্ছেন ধাপে ধাপে। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়ার অন্তরালে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলছেন। বাংলাদেশ দলের বর্তমান হালচাল নিয়েই গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে নিজের মতামত জানান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
চন্ডিকা : আমার মনে হয় না, কোনো কিছু পরিবর্তন হয়েছে। একই ক্রিকেটার, স্কিলও একই। কেবল ড্রেসিংরুমের পরিবেশে সামান্য পরিবর্তন এসেছে– আমরা যেভাবে কথা বলি এবং যা নিয়ে আলোচনা করি। আমি দলের মধ্যে মানসিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করছি। তাদের বলেছি, ফলাফল যেমনই হোক– তারা ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক, আমাদের কাছে তাদের মূল্য আছে। তারা আমাদের কাছে মূল্যবান এবং তাদের স্কিলসেটের কারণেই দলে নিয়েছি। এর বাইরে কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। আমি জানি না, আগে কী হেয়েছে, তবে স্কিল ঠিকই আছে।
চন্ডিকা : একটি শব্দ দিয়ে বলা হলো– ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা।’ এটি বড় একটি শব্দ। এর পেছনে অনেক ব্যাপার আছে। যেমন, আপনি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করলেন, যাতে খেলোয়াড়রা ফলাফল আর এর প্রভাবের ব্যাপারে চিন্তা না করে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিল। শুধু কোচ বা নির্বাচকরা নন, এমনকি সতীর্থদের কাছ থেকেও তারা যদি খোলা মনে চেষ্টা করার পরও ব্যর্থ হয়– তবু ঠিক আছে। তারা ওই একই খেলোয়াড়ই থাকবে, যাদের আমরা বিশ্বাস করি। আমার মনে হয়, এটিই বড় পরিবর্তন। যেটা আমাদের মধ্যেও সম্প্রতি ঘটে গেছে। আমাকে অন্য কোচরাও বলেছেন, এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। যেটা আমি তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। অতএব আমি জানি, এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে।
চন্ডিকা : অন্যদের যা করতে হয়, তাকে তাই করতে হবে। রান করে ফিরতে হবে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে। সে যদি তা করতে পারে এবং দলে জায়গা খালি থাকে, তাহলে তাকে অন্য সবার মতোই বিবেচনা করা হবে।
চন্ডিকা : অবশ্যই। তার চেহারার কারণে নয়, পারফরম্যান্সের কারণেই। যে কেউ দলে আসে বা বাইরে যায় পারফরম্যান্সের কারণেই। কখনও কখনও কৌশলগত কারণে ভিন্ন পরিকল্পনা থেকে বা অন্য কাউকে দেখার প্রয়োজনে এ রকম কিছু করা হয়ে থাকে।
চন্ডিকা : তার জন্য নতুন শুরু। আমরা মনে করি, তার স্কিলসেট যথেষ্ট ভালো। বিশেষ এমন কিছু আছে, যেটা আমরা দীর্ঘমেয়াদে উন্নত করতে পারি। সে ভাবনা থেকেই তাকে নেওয়া। এখানে সে ভালো করুক বা নাই করুক। ভবিষ্যতের জন্য আমরা কিছু আক্রমণাত্মক স্পিনার তৈরির চেষ্টা করছি।
চন্ডিকা : আমার মনে হয় মুস্তাফিজও আছে। তিনজন খেলোয়াড়। আমার মনে হয়, বোর্ডের সিদ্ধান্ত দেশের খেলা আগে। তারা অনাপত্তিপত্র চাওয়ার আগে বোর্ড বোধহয় সে বার্তাই দিয়েছে বা নিলামের আগেও একই কথা বলেছিল।
চন্ডিকা : তারা আইপিএলে খেলে স্কিলে উন্নতি করতে পারবে, তা নিশ্চিত। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, খুবই উঁচু মানের একটি টুর্নামেন্ট। তবে অগ্রাধিকার হলো দেশের হয়ে খেলা।
চন্ডিকা : আমি একে নতুন যুগ হিসেবে দেখি না। আমরা আমাদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। আমি যা বললাম, তার মানে এই নয়, আমরা যাব, মারব। আক্রমণাত্মক হতে হবে সব দিক থেকে। দল নির্বাচন, ফিল্ডিং সাজানো, শারীরিক ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং– সবকিছুকেই বোঝানো হচ্ছে। কৌশলগতভাবে আমরা আক্রমণাত্মক হতে যাচ্ছি।