নৌম্যাডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিরা ২০১২ সালে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স নিজ দেশে নিয়েছিলেন। পরবর্তী এক দশকের মধ্যে এক বছর ছাড়া সংখ্যাটি কেবলই বেড়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশিদের রেমিট্যান্স নেওয়ার পরিমাণ বেড়ে ৫ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়ায়। পরের বছরে ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স নিজেদের দেশে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিরা।
অবশ্য নৌম্যাডের পরিসংখ্যানটি আংশিক। এর কারণ ব্যাংকিং মাধ্যম ছাড়াও অবৈধভাবে রেমিট্যান্স নিজ নিজ দেশে পাঠান বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিরা।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতার নামে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ২৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। কম করে ধরলেও বাংলাদেশে আড়াই লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে পর্যটক ভিসায় এসে কাজ করেন ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী। এসব বিদেশি কর্মী প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেন।
টিআইবি জানায়, এ দেশে কোনো প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে গেলে জনপ্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে ২৩ হাজার থেকে ৩৪ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। বৈধভাবে বিদেশি কর্মী আনা হলে আটটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী আনা হলে তিন ধাপেই নিয়োগ চক্র শেষ হয়। সে জন্য বেশির ভাগ পর্যটক ভিসায় এসে এ দেশে কাজ করেন।
টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আট ধরনের কাগজপত্র ঠিক করতে এই নিয়মবহির্ভূত আর্থিক লেনদেন করতে হয়। সেগুলো হচ্ছে ভিসার সুপারিশপত্র, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ভিসা সংগ্রহ, বিদেশি নাগরিক নিবন্ধন, কর্ম অনুমতির জন্য আবেদন, নিরাপত্তা ছাড়পত্র (এসবি পুলিশ), নিরাপত্তা ছাড়পত্র (জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা), নিরাপত্তা ছাড়পত্র (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঘুষ দিতে হয়।