বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেন থামিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ

0
22
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ম রেললাইনে

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়ে রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করে অবস্থান নেন। ওই সময় এক ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে রাখা হয়।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আর মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে মুক্তমঞ্চের সামনে একটি প্রতিবাদ সভা করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রতিবাদ সভা শেষে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি আবদুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টা ২০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত এক ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করে রাখার পরে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে
ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে

আন্দোলন চলাকালে ভেটেরিনারি অনুষদের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, ‘২০১৮-এর ছয় বছর পরে একই কোটা নিয়ে আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এটিকে কি দেশের উন্নতি বলা যায়? ঘুরেফিরে আমরা ছয় বছর পিছিয়েই রইলাম। মুক্তিযোদ্ধা কোটা যদি থাকবেই, তাহলে একাত্তরে বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রাণত্যাগ অর্থহীন হয়ে যায়। আমরা দেশের বীরদের অবশ্যই সম্মান করি। তবে কোনো ধরনের কোটা–বৈষম্য আমরা মেনে নেব না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ ও অন্য সব প্রতিযোগিতার জায়গায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই।’

কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী

অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা আজীবন সর্বোচ্চ সম্মানের যোগ্য। তবে তাঁদের সম্মান দেওয়ার নাম করে কোটাপ্রথার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে চরম বৈষম্যের চেষ্টা করা হচ্ছে। ৪ জুলাইয়ে কোটার বিষয়ে যে রায় হবে, সেখানে আমরা মেধাবীদের জয় দেখতে চাই। আর তা না হলে দেশের সমগ্র ছাত্রসমাজ একযোগে রুখে দাঁড়াবে।’

২০১৮ সালে কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরে দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে তখনকার প্রচলিত কোটাব্যবস্থা বাতিল করে পরিপত্র জারি করা হয়। পরে ২০২১ সালে ওই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটুকু সংশোধনের জন্য উচ্চ আদালতে রিট হয়। রিটের রায়ে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.