দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বাংলাদেশের আদালতে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার চলছে। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাজধানীর পূর্বাচলে মা, ভাই, বোনকে অনিয়মের মাধ্যমে প্লট পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। নিজের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিচার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেছেন টিউলিপ।
নিজেকে নির্দোষ ও এ বিচারকে প্রহসন হিসেবে দাবি করে টিউলিপ বলেন, ঢাকায় এখন যে তথাকথিত বিচার চলছে, তা একটি প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি বানানো অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দ্বারা পরিচালিত।
সরকারের সাড়া পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, গত এক বছরে, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বারবার পরিবর্তিত হয়েছে, তবু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ একবারও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি কখনও কোনো আদালতের সমন পাইনি, বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পাইনি।
তিনি বলেন, যদি এটি একটি প্রকৃত আইনি প্রক্রিয়া হতো, তাহলে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার বা আমার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করত, আমাদের আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্রের জবাব দিত এবং তাদের কাছে থাকা প্রমাণ পেশ করত। এর পরিবর্তে, তারা মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক অভিযোগ ছড়িয়েছে, যা সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে কিন্তু তদন্তকারীরা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমার কাছে উপস্থাপন করেনি।
টিউলিপ সিদ্দিক জানান, তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ড. ইউনূস এতে সাড়া দেননি। এ বিষয়টি আজ আবারও উল্লেখ করেছেন তিনি।
The so-called trial now underway in Dhaka is nothing more than a farce — built on fabricated accusations and driven by a clear political vendetta.
Over the past year, the allegations against me have repeatedly shifted, yet I have never been contacted by the Bangladeshi…
— Tulip Siddiq (@TulipSiddiq) August 13, 2025
তিনি বলেন, লন্ডনে ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক সফরের সময় তার সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমি। তবে, এটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে টিউলিপ বলেন, আমি শুরু থেকেই স্পষ্ট যে আমি কোনো ভুল করিনি এবং আমার কাছে উপস্থাপন করা যেকোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের জবাব দেব।
এদিকে দুদকের তদন্তে উঠে আসে, রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের সন্তানদের নামে মোট ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেয়া হয়েছে।
তার মধ্যে একটি শেখ হাসিনার নিজের নামে, আরেকটি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে, অপর একটি তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে।
অপরদিকে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার নামে, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নামে ও অপরটি তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে। টিউলিপের নামে প্লট না থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে নিজের মা, বোন ও ভাইকে প্লট পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে তাকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বিচার শুরুর প্রক্রিয়ায় আসামি হিসাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও তা নিয়ে শঙ্কিত নন টিউলিপ। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো বন্দি কিংবা আসামি বিনিময় চুক্তি না থাকাটাই হয়ত স্বস্তি দিচ্ছে তাকে।