বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে নিচে নেমে আসার দুই দিনের মধ্যে আবার তা বেড়েছে এবং এখন ৩ হাজার ৩৬ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল, কিন্তু বিদেশ থেকে ডলার আসায় রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে।
গত সোমবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৮৩ কোটি ডলার। এরপর আবার কিছু ঋণ ও অনুদানের অর্থ দেশে আসে। ফলে রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেকটা বেড়ে যায়। ওই সময়ে প্রবাসী আয় বৈধ পথে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসার পরিমাণও বেড়ে যায়। অন্যদিকে, আমদানিও কমে যায় তখন। ফলে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রিজার্ভ বেড়ে প্রথমবার ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাতে আমদানি খরচও বাড়ে। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি প্রবাসী ও রপ্তানি আয়।
সে কারণে আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে রিজার্ভ কমেছে। ডলার-সংকট মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় দিন দিন ডলার-সংকট আরও প্রকট হয়।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ ৩ হাজার ৩৬ কোটি ডলার হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে এর ৬০০ কোটি ডলার রিজার্ভ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নয়।
আইএমএফ গত মার্চে সর্বনিম্ন ২২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, যা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগামী জুনে এই লক্ষ্য বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির।
আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে আইএমএফ।