তাঁকে সমর্থন জানিয়ে ৫৩ জন একটি ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২০০১ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী জোসেফ স্টিগলিৎজ, নিউ আমেরিকা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যান–মারি স্লটার ও এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ডের প্রেসিডেন্ট ফ্রেড ক্রুপ।
ওই ঘোষণায় তাঁরা বলেছেন, ‘অজয় বাঙ্গা বিভিন্ন খাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা বেশ বিরল। তিনি সফলভাবে সরকারি, বেসকারি ও সামাজিক খাতের মিলন ঘটিয়েছেন। তাঁর রয়েছে উন্নয়নশীল দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা। তিনি এই জটিল সময়ে বিশ্বব্যাংকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক ব্যক্তি।’
ভারতে জন্ম নেওয়া মার্কিন নাগরিক অজয় বাঙ্গা এরই মধ্যে ভারত, কেনিয়া, ঘানা ও বাংলাদেশের সমর্থন পেয়েছেন। এ ছাড়া জি–২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বৈঠকে তিনি ফ্রান্স ও জার্মানির পক্ষ থেকে ইতিবাচক মূল্যায়ন পেয়েছেন।
তাঁর মনোনয়নের প্রতি যে সমর্থন বাড়ছে, ৫৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর করা ঘোষণাপত্রটিকে তারই একটি প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস মেয়াদ পূর্তির আগেই দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত মাসে ৬৩ বছর বয়সী অজয় বাঙ্গাকে মনোনয়ন দেন। জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত যেসব কারণ রয়েছে, সেগুলোকে সমর্থন করতে তাঁর প্রাথমিক ব্যর্থতার পর ডেভিড ম্যালপাসকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
কয়েক মাস ধরে সমালোচনা চলার পর তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত জানান।
অজয় বাঙ্গা লাতিন আমেরিকায় একটি কৃষি কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যে কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি কৃষকদের সহনশীলতা বাড়িয়ে তোলা। এ ছাড়া তিনি বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বেসরকারি অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে একটি শস্যবিমা কর্মসূচিও চালু করেন। তাঁদের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারীরা এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
তাঁরা বলেন, ‘তিনি এটা বোঝেন যে নানা ধরনের কর্মশক্তিকে আরও জোরদার করতে বিশ্বব্যাংককে অবশ্যই কাজ করতে হবে এবং সরকার, বেসরকারি খাত, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক, নাগরিক সমাজ ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের গ্রহণ করা বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আর কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেননি। তবে রাশিয়া বলেছে যে একজন প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সে তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করছে। মে মাসের গোড়ার দিকে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চেষ্টা চলছে, তবে রাশিয়া প্রার্থী দিলে এই প্রক্রিয়া শ্লথ হতে পারে।
এককভাবে বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বেশি শেয়ার ধারণ করে যুক্তরাষ্ট্র। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর প্রধান হিসাবে সব সময় একজন মার্কিন নাগরিক দায়িত্ব পালন করছেন।
রাশিয়া কিংবা তার মিত্র কোনো দেশ থেকে যদি কেউ চ্যালেঞ্জার হিসেবে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে হয়তো ফলাফলে কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে এই ব্যাংক ও অন্যান্য বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের শেয়ারের তৃতীয় বৃহত্তম মালিক হলো চীন।