বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে আজকে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে আজকে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বদলীয় সভা এই অন্তর্বর্তী সরকার করেছে। এর আগে কোনো সরকার এটি করতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও তাদের গণমাধ্যমে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং প্রোপাগান্ডা রুখে দিতে দেশের সর্বস্তরের গণমাধ্যমের সহযোগিতায় একটি ক্যাম্পেইনের জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগরতলা এবং কলকাতায় উপ-হাইকমিশনে হামলাসহ পতাকায় আগুন দেওয়া এবং ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাংলাদেশ নিয়ে একের পর এক উসকানিমূলক বক্তব্য ভারতীয় সরকারের অবস্থান কি না, তা জানার জন্য কথা হয়েছে। সরকার এ বিষয় নিয়ে ভারতীয় সরকারের কাছে ব্যাখ্যাও চাইবে বলেছে।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘যদি ভারত একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়, তাহলে সরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও সেই ধরনের অ্যাপ্রোচ হবে। যদি না দেখায় তাহলে বাংলাদেশের মিত্র দলগুলো কর্মকৌশল ঠিক করবে।’
তিনি বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ থেকে দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে দুবছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন করা এবং দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি রাখতে ছয় মাসের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা। এখন সব দলকে নিয়ে জাতীয় সমন্বিত কর্মসূচি হতে পারে।’
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তখন থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতনসহ বেশ কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এরমধ্যে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও বেড়ে যায়। তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ‘চিন্ময়ের অনুসারীরা’ সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ২ ডিসেম্বর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা হয়, যাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ হিসেবে বর্ণনা করে ‘ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এসব পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা।