রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় বিষক্রিয়ায় স্কুলপড়ুয়া দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বালাইনাশক (পেস্ট কন্ট্রোল) প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তির নাম আশরাফ ও ফরহাদ। তাঁরা ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড নামের পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তা। তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস কে রায় নিয়তি এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপির ডিবি সূত্র জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস কে রায় নিয়তি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আজ দুপুরের দিকে এই সংবাদ সম্মেলনে হবে।
সূত্র জানায়, তেলাপোকা মারার ওষুধের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি। তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও এমডির অবস্থান শনাক্ত করে। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
একই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মী টিটু মোল্লাকে গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মারা যাওয়া দুই শিশুর নাম শায়ান মোবারত (১৫) ও শাহির মোবারত (৯)। তাদের বাবা মোবারক হোসেন, মা শারমিন জাহান। এই দম্পতির অপর একটি সন্তান (মেয়ে) আছে।
চিকিৎসকের বরাতে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র বলছে, তেলাপোকা মারার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বাবা মোবারক হোসেন গত সোমবার তিনজনকে আসামি করে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
মামলার এজাহার, পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার তেলাপোকাসহ পোকামাকড় নিধনে পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের বাসায় ডেকে নেন মোবারক-শারমিন দম্পতি। পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা বাসাটিতে বিষ স্প্রে করেন। পরে পরিবারটির সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। গত রোববার ভোরে দুই ভাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শাহিরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শায়ানও মারা যায়। এই দম্পতির অপর সন্তান (মেয়ে) সুস্থ আছে।