বলিভিয়ায় সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ, সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার
লাতিন আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল হুয়ান হোসে জুনিগাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডয়সে ভেলের প্রতিবেদেনে বলা হয়, লা পাজ শহরে প্রেসিডেন্ট লুইস আরসের বাসভবন ঘিরে ফেলে সেনারা। প্রেসিডেন্ট বলিভিয়ার নাগরিকদের বলেন, তারা যেন গণতন্ত্র রক্ষা করতে সক্রিয় হন। বিশ্ব নেতারা অভ্যুত্থানের নিন্দা করেন।
সেনাদের এই অভ্যুত্থান দার্ঘস্থায়ী হয়নি। বুধবার (২৬ জুন) বেলা চারটে নাগাদ তারা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢোকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্টের বাসভবনসহ সরকারি এলাকা থেকে সরে যায় সেনারা। প্রেসিডেন্টের নির্দেশ ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করার পর তারা সরে যায়।
সেনা জওয়ানরা তার প্রাসাদে আসার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট লুইস আরসে সামাজিক মাধ্যমে বলেন, বলিভিয়ার সেনার কয়েকটি ইউনিট বেআইনিভাবে জড়ো হয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।
যখন এই অভ্যুত্থান চলছে, তখনই তিনি নতুন সেনা কম্যান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন। তারা তখন প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও লা পাজের কেন্দ্রে থাকা অন্য জায়গা থেকে সেনাকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। সেনারা যখন ফিরে যাচ্ছে, তখন আরসের হাজার হাজার সমর্থক বলিভিয়ার পতাকা নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সেনাপ্রধান বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার
আরসে যখন নতুন সেনা কমান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন, তখন বিদ্রোহী সেনাপ্রধান স্বাভাবিকভাবেই বরখাস্ত হয়ে যান।
স্থৈানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের ভিতরে আরসের সঙ্গে জুনিগার কথা হচ্ছে। আরসে তাকে ও সেনাকে বলছেন, আমি আপনাদের ক্যাপ্টেন, আমি নির্দেশ দিচ্ছি, আপনারা ফিরে যান। আমি কোনো অবাধ্যতা বরদাস্ত করব না।
গ্রেপ্তার হওয়া সেনাপ্রধান জুনিগা টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, তার আশা ছিল সরকারে পরিবর্তন হবে। তিনি সাবেক অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টসহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।
আরসের পাশে সাবেক প্রেসিডেন্ট
সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালস আরসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, তিনি তার সমর্থকদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে বলছেন। সেনাকে কিছুতেই গণতন্ত্র ধ্বংস করতে দেয়া হবে না এবং মানুষকে ভয় দেখাতে দেয়া হবে না।
স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বলিভিয়া দুইশটির মতো সেনা অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহ দেখেছে। ২০১৯ সালে মোরালসকে যখন ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তখনও তার পিছনে সেনার ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তিনি নিয়ম ভেঙে চতুর্থবার প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেনা জানিয়ে দেয়, তারা তাকে তার অফিসে নিরাপত্তা দিতে পারবে না।
এরপর মোরালস পদত্যাগ করেন এবং তার সমর্থকরা অভিযোগ করেন, এটাও সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা।