প্রবল বৃষ্টিতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ২২ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে তিস্তা নদীতে। বন্যায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। তাদের সন্ধানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। হুমকির মুখে পড়েছেন ২২ হাজার বাসিন্দা। ভেঙে পড়েছে ১১টি সেতু। বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫০০ পর্যটক। হেলিকপ্টারে করে তাদের সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনাক হ্রদের ওপর মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় গত মঙ্গল ও বুধবার রাতে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এক ঘণ্টায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১০ সেন্টিমিটার অথবা আধা ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে সেটাকেই মেঘভাঙা বৃষ্টি বা ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়। মূলত সেই বৃষ্টিপাতের পর পার্বত্য সিকিম রাজ্যের লোনাক হ্রদ বুধবার উপচে পড়ে এবং এর ফলে বড় বন্যা দেখা দেয়।
সিকিমের মুখ্য সচিব বিজয় ভূষণ পাঠক বলেন, লাচেন এবং লাচুংয়ে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আটকা পড়েছেন। মোটরসাইকেলে করে সেখানে যাওয়া ৩ হাজার ১৫০ জনও বন্যার কারণে আটকা রয়েছেন। আমরা সেনা ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেব।
পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কায় পর্যটকদের এখন সিকিমে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং বলেছেন, আগের সরকারের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা দুর্বলভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় এই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
এদিকে, তিস্তা নদীতে ভেসে আসা মর্টার শেল গুপ্তধন ভেবে খুলতে গিয়ে বিস্ফোরণে দু’জন নিহত হয়েছেন। আহত হন আরও ছয়জন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির চাঁপাডাঙ্গা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্যায় ভেসে যাওয়া সেনাবাহিনীর অস্ত্রেরই একটি এই মর্টার শেল।