বন্যার্তদের জন্য লাইফ জ্যাকেট চেয়ে নিজেই ভেসে গেলেন সাগর

0
44
সাইফুল ইসলাম সাগর

বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাইফুল ইসলাম সাগর (২৪) নামে এক কলেজছাত্র। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেনী শহরের অদূরে পানির স্রোতে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সাগর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্যামপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন লাতুর ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ছোট সাগর। তিনি ফেনী কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। সাগরের বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।

আশরাফুল ইসলাম নামে এক ছাত্রদল নেতা শুক্রবার রাতে সাগরের ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেন। ভিডিওর ক্যাপশনে তাঁকে ছাত্রদল নেতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ভিডিওতে সাগরকে বলতে শোনা যায়, ‘এই মুহূর্তে এখানে (কুমিল্লার বুড়িচং) লাইফ জ্যাকেট বেশি দরকার। কারণ নৌকা সহজে ম্যানেজ করা যাচ্ছে না। আমার কুমিল্লার ভাই-বন্ধু যারা আছেন, তাদের সবার কাছে অনুরোধ থাকবে সবাই লাইফ জ্যাকেট নিয়ে আসেন। কারণ এখানে প্রচুর বাচ্চা আছে। তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।’

ভিডিওতে তিনি কুমিল্লার সবাইকে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে বুড়িচংয়ে আসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘যে পারেন, লাইফ জ্যাকেট ম্যানেজ করে এদিকে আসেন।’ ফেসবুক লাইভের পর সাগর ফেনীতে যান বলে জানা গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাগরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর চাচাতো ভাই সাইদুল হক সুজনের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি জানান, শহরের দুলাল সিনেমা এলাকায় আমানত হার্ডওয়্যার নামে সাগরদের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমানে তাঁর মা-বাবা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। সাগর তাঁর বড় ভাইদের সঙ্গে ফেনী শহরে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। একই সঙ্গে ফেনী কলেজে পড়াশোনা করতেন তিনি। তবে ফেনীতে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তাঁর সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি।

সাগরের ফুফাতো ভাই কাউছার হামিদ বলেন, মরদেহ ফেনী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। মামা-মামি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরলে দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইউনুস হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে ফেনীতে বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে গিয়ে পানির স্রোতে পড়ে সাগরের মৃত্যু হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.