ঈদের আগে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে অস্থায়ী চৌকি পেতে রাজধানীর বঙ্গবাজারে বেচাকেনা শুরু করেছেন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। প্রথম দিন বুধবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে ৬৮৮ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ব্যবসার চৌহদ্দি হিসেবে প্রত্যেককে ১৭ বর্গফুট জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। সেখানেই চৌকির ওপর পণ্যসামগ্রী রেখে তারা ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে ব্যবসায়ীদের নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। ক্রেতাদেরও খুব বেশি ঘেঁষতে দেখা যায়নি।
আজ দুপুরে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পরে তিনি ডিএসসিসির পক্ষ থেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ২ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ঈদের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনেরও আশ্বাস দেন।
এর আগে সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, গত ৯ দিন আগে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের আবর্জনা পরিষ্কার করে সেখানে বালু ফেলে ইট বসানো হয়েছে। মার্কেটের দক্ষিণ অংশে ইট বসানোর কাজ চলমান রয়েছে। সেখানেও পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ব্যবসায়ীদের জায়গা করে দেওয়া হবে।
বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি চৌকি প্রস্থে সাড়ে ৩ ফুট এবং দৈর্ঘ্যে ৫ ফুট। প্রথম দিনে ৬৮৮ জনকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, তার দুটি শিশুদের পোশাকের দোকান ছিল। আগুনে সবই পুড়েছে। এখন পাইকারদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য এনে বসছি। ঈদের আগে ভালো ব্যবসা হতো। এই পরিবেশে সেটা হবে কি-না জানি না।
প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল সকাল সোয়া ৬টায় রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে একে একে ফায়ার সার্ভিসের অর্ধশত ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তাদের সঙ্গে পুলিশ, র্যাব, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তার আগেই আগুনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হন বঙ্গবাজারের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ডিএসসিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এ ঘটনায় মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ ছাড়া পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
















