অ্যাকশন, ক্রাইম ধারার এই সিনেমায় উঠে এসেছে চোরাচালানের মাধ্যমে উপকূলীয় নারীদের টিকে থাকার সংগ্রাম। সিনেমায় যেমন রয়েছে অ্যাকশন, তেমনি মানবিক নানা বিষয়। যে কারণে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বেশি।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের কথা। যখন কোরিয়ার সঙ্গে সারা বিশ্বের যোগাযোগ সেভাবে ছিল না। তখন কালোবাজারি ডিলাররা যুক্তরাষ্ট্রের সিগারেটসহ অনেক কিছুই হাতের নাগালে পেতেন। এসব পণ্য অবৈধ পথে কোরিয়ায় পৌঁছাত। এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতরা বেশির ভাগই ছিলেন পুরুষ। তাঁরা একই সঙ্গে সাগরে মাছ লুট করাসহ নানা রকম অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু পরে তাঁরা বুঝতে পারেন এসব চোরাচালান নারীদের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। পরে এই কাজে যুক্ত হন নারীরা। সমুদ্র উপকূলে বাড়তে থাকে নারী অপরাধ কর্মকাণ্ড। সেই ঘটনাগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে কোরীয় সিনেমা ‘স্মাগলার্স’।
সিনেমাটি গত দুই সপ্তাহ ধরে আয়ে শীর্ষে রয়েছে। সিনেমাটি দিয়ে এ বছর নতুন করে নিজেদের বক্স অফিসে বাজিমাত করল কোরিয়া। কারণ, এর আগে মুক্তি পাওয়া ‘মিশন ইম্পসিবল: ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’, ‘এলিমেন্টাল’, ‘দ্য রাউন্ড আপ: নো ওয়ে আউট ’, ‘ফাস্ট এক্স’, ‘গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’ একাধিক হলিউড সিনেমা কোরিয়ার বক্স অফিসে রাজত্ব করছিল। সেখানে দেশের সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের অন্যতম কারণ সিনেমায় উঠে এসেছে কোরিয়ার নিজস্ব গল্প, যেখানে দর্শকেরা নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক বাজারেও সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সিনেমায় হেনিয়ো সম্প্রদায়কে তুলে ধরা হয়েছে। হেনিয়ো বলতে কোরিয়ার জেজু দ্বীপের নারী ডুবুরিদের বোঝানো হতো। তাঁদের কেউ কেউ পরে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তাঁরা সমুদ্র থেকে জেলেদের অপহরণ করে মাছ লুট করতেন। তারা সমুদ্র থেকে জেলেদের অপহরণ করে মাছ লুট করতো। ৭০ দশক থেকে এই শ্রেণির মানুষেরা উপকূলে আলাদা একটি সমাজব্যবস্থা চালু করে। বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সেই স্মাগলার্সদের সংখ্যা কমছে। একসময় হেনিয়ো যে ঐতিহ্য চালু করেছিল, সেটা এখন মৃতপ্রায়। এখানে সেই চরিত্রগুলো নতুন করে পর্দায় তুলে আনায় ভক্তদের প্রশংসা পাচ্ছেন নারী নির্মাতা সাং উন রিউ। বেশির ভাগ দর্শকের মতে, কিম হিউসু, লি ডু গন, মিন সিগোসহ বেশির ভাগ অভিনয়শিল্পী চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছেন।