ফ্রান্সে অবসর নেওয়ার বয়সসীমা ৬২ থেকে ৬৪ বছরে উন্নীত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বোর্দোর টাউন হল ভবনের সামনের গেটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য কারা দায়ী তা জানা যায়নি। দমকল কর্মীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ফ্রান্সজুড়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ ও রাজধানী প্যারিসে এক লাখ ১৯ হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। পুলিশ সারাদেশ থেকে ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্যারিসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে মধ্য থেকে মুখোশপরা দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যারা দোকানের জানালা ভেঙে দেয়, রাস্তার আসবাবপত্র ভেঙে দেয় ও ম্যাকডোনাল্ডসের একটি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। এসময় পুলিশ টিয়ারশেল এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এপি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, প্যারিস থেকে ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত দুই মাস ধরে অবসর নেওয়ার বয়সসীমা সংস্কারের ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে এ প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে জনমতও গঠিত হয়েছে। সরকারপন্থীদের দাবি— পেনশনের বয়সসীমা বাড়ালে দেশের সার্বিক কর্মসংস্থানে কোনো চাপ পড়বে না এবং প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা শুরু হয়েছে, সেটি রোধ করা যাবে।
তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলো বলছে, কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন এবং জনসাধারণের একাংশ সরকারের এ প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে পারেনি।
গত দুই মাস এ নিয়ে পার্লামেন্টে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়েছে, একাধিক ধর্মঘটও হয়েছে দেশটিতে। তবে গত ১৬ মার্চ পেনশনের বয়সসীমা বর্ধিতকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর বিক্ষোভ শুরু হয়। ওইদিন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন সরকার অবসর নেওয়ার বয়সসীমা ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার ঘোষণা দেয়। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ সংক্রান্ত বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন ও তার ওপর পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোট নেওয়া হয়নি, যা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আবশ্যক।
২৫ মার্চ এই ঘোষণার পর ১৬ মার্চ ফ্রান্সের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জোট নুপেসের পার্লামেন্ট সদস্যরা ও স্বতন্ত্র আইনপ্রণেতারা সরকারের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। একই পথে হাঁটে দেশটির প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল র্যালি পার্টিও। এই দলটি ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী দল হিসেবে পরিচিত।