ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই: আসিফ নজরুল

0
22
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলাকে ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণ’ হিসেবে দেখছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তবে একই ধরনের কথাবার্তা শোনার মানসিকতা রাজনৈতিক দলেরও থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।

গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তাঁরা মনে করছেন, সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও প্রশাসনিক পদায়নে পক্ষপাতমূলক আচরণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, যা সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করছে।

অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাঁদের নাম ও কণ্ঠ রেকর্ড আছে বলে দাবি করেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, এসব উপদেষ্টা সভায় কী বক্তব্য দেন, এর খবরও তাঁর কাছে আছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথাগুলো বলেন।

‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’—সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

উপদেষ্টাদের নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এসব প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আজ সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উপদেষ্টাদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন করা হয়, হুমকি দেওয়া হয়। আমার কাছে মনে হয়, এটা একটা উত্তরণ হয়েছে। আমরা আগের সরকারগুলোর আমলে দেখতাম, যাঁরা সরকারের লোক, তাঁরা রাজনৈতিক দলগুলোকে হুমকি দিতেন। আর এখন উপদেষ্টা পরিষদে থাকা লোকজনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পক্ষ থেকে ইচ্ছেমতো, যা মুখে আসে সমালোচনা করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এটা তো ভালো, এটা একটা গণতান্ত্রিক উত্তরণ বলা হয়। তবে যাঁরা রাজনৈতিক দল আছেন, ওনাদের একটু বলে রাখি, একই ধরনের কথাবার্তা আপনাদের সম্পর্কে বললে সেটা শোনার মানসিকতা আপনাদের থাকতে হবে।’

জুলাই সনদে সব দল সই করবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুরো প্রক্রিয়ার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছে। তার ওপর তিনি বিশ্বাস করেন, এ নিষ্ঠার ধারাবাহিকতা হিসেবে এই জুলাই সনদে সই করবে। আর বিষয়বস্তু নিয়ে জুলাই সনদ হচ্ছে। মূল মতভেদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে, সেটি তো আর সই করা হচ্ছে না।

বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সেক্রেটারিয়েট করার বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে অন্যতম প্রস্তাব। প্রধান বিচারপতির সংস্কার ভাবনাতেও এটি আছে। এ বিষয়ে অনেক দূর কাজ করা হয়েছে। এখন কিছু বিষয়ে মতভিন্নতা আছে। সেটি নিয়ে আরেকটু আলাপের প্রয়োজন রয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ আইনের খসড়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদ যদি মনে করে, তাহলে এটি পাস করা হবে। তাঁর ধারণা, এই সরকার তখন সুপ্রিম কোর্টের আলাদা সচিবালয় করতে পারবে।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যে শঙ্কার বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন করার ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর। এটা নিয়ে কোনো রকম দ্বিতীয় চিন্তা প্রসঙ্গেও আলোচনা করি না।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.