ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়নি এমন লোক বা পরিবার হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণত পচা, বাসি, অস্বাস্থ্যকর, জীবাণুযুক্ত খাবার ও পানীয় আহার বা পান করলে ফুড পয়জনিং হতে পারে। এ ছাড়া শিশুদেরও একই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
অনেক ক্ষেত্রে খাবার হয়তো স্বাস্থ্যসম্মত থাকে, তবে যেসব পাত্রে পরিবেশন করা হয়, সেসব পাত্র ভালো করে ধোয়ামোছা হয় না। ফলে জীবাণুমুক্ত হয় না। এসব পাত্রে খাবার পরিবেশন করা হলেও ফুড পয়জনিং হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দ্বারা ফুড পয়জনিং হতে পারে।
খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণ যা-ই হোক না কেন, লক্ষণগুলো মোটামুটি একই। ফুড পয়জনিং হলে পেটে ব্যথা, হজমে সমস্যা, ডায়রিয়া, বমি এবং অনেক ক্ষেত্রে জ্বর হতে পারে। অনেক সময় সাধারণ ডায়রিয়া ও ফুড পয়জনিংয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না রোগীরা।
ফুড পয়জনিংয়ের রোগীদের সাধারণত পাতলা পায়খানা ও বমি হলে খাবার স্যালাইন খেতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি রোগীর অবস্থা অনুযায়ী জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সেবনের প্রয়োজন পড়ে। যেহেতু ফুড পয়জনিং জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়, তাই অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে। এ ছাড়া জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সেবন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিস্পাসমোডিক বা ব্যথানিরোধক ওষুধ সেবন করা যাবে না।
পাশাপাশি ফুড পয়জনিংয়ে ভেষজ চিকিৎসা চালাতে পারেন। তবে সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আদা: কুচি আদার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু খেলে তা পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
জিরা: পেট খারাপ, পেটে ব্যথার মতো সমস্যায় এক চা-চামচ জিরা গুঁড়া খেলে সুফল পেতে পারেন।
তুলসী: ইনফেকশন– সে পেটেরই হোক বা গলার, তা দূর করার জন্য দারুণ উপযোগী তুলসী পাতা। থেঁতো করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারলে সুফল পাবেন।
কলা: কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা ফুড পয়জনিং কমাতে সাহায্য করে।
আপেল: ডায়রিয়া যে ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়, তার প্রভাব দূর করার পাশাপাশি এসিড কমাতেও সাহায্য করে।
লেবু: যেসব ব্যাকটেরিয়ার জন্য ফুড পয়জনিং হয়, তার প্রভাব নষ্ট হয়ে যায় লেবুর রসের এসিডিটিতে। একটা পাতিলেবুর রসের সঙ্গে সামান্য চিনি দিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
লেখক: ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার, বিভাগীয় প্রধান, শিশু কার্ডিওলজি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল