ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর প্রতি ফ্রান্সসহ অন্তত ১৫টি পশ্চিমা দেশ আহ্বান জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
নিউইয়র্কে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই সম্মেলনে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের স্থায়ী সমাধানে ‘দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক’ পথরেখা পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলা হয়।
সম্মেলন শেষে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, নিউইয়র্ক সম্মেলন থেকে আমরা একসঙ্গে বার্তা দিয়েছি- ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে আমরা এবং যারা এখনও দেয়নি, তাদেরকেও আহ্বান জানাচ্ছি।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, তার দেশ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। তার এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে প্যারিস। তবে ফ্রান্স জানায়, এই স্বীকৃতি বৈশ্বিক কূটনৈতিক উদ্যোগকে গতিশীল করবে এবং ফিলিস্তিনের সার্বভৌমতা অর্জনের পথ সুগম করবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও মঙ্গলবার জানান, ইসরায়েল যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়, তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। এতে করে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য হতে পারে জি-৭ জোটভুক্ত প্রথম দুটি দেশ, যারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা ১৫ দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, সৌদি আরব, স্পেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড। তারা দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে নিজেদের ‘দৃঢ় অঙ্গীকার’ পুনর্ব্যক্ত করেছে। যদিও স্বাক্ষরকারী অন্তত ৯টি দেশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড। তবে এসব দেশ জানিয়েছে, স্বীকৃতির বিষয়টি তাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্ক সম্মেলনে অংশ নেওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), আরব লিগ এবং আরও ১৭টি দেশ হামাসকে গাজার ওপর শাসন ত্যাগ ও অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে। চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানে তারা হামাসকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই সম্মিলিত পশ্চিমা প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।