বাংলাদেশ নারী বিশ্বকাপ দলের সদস্য লতা মণ্ডলকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেঁসে গেলেন জাতীয় দলে খেলা আরেক নারী ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার। রোববার আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন ইউনিটের (এসিইউ) মুখোমুখি হবেন তিনি। ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে। আইসিসির এসিইউ সদস্য স্টিভ তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। সাক্ষাৎকারে একজন আইনজীবী বা বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সোহেলী একজন আইনজীবীকে সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
নারী টি২০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ম্যাচের আগের দিন (সোমবার) ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা লতা মণ্ডলকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাল্টা ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে লতা মণ্ডল বান্ধবী ও জাতীয় দল সতীর্থ সোহেলীকে এ ধরনের প্রস্তাব না দেওয়ার অনুরোধ জানান। পরে দলের কোচ দিপু রায় চৌধুরী ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলামকে জানান লতা।
বিসিবি গতকাল জানায়, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে বিশ্বকাপে দায়িত্বরত এসিইউকে সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করার পাশাপাশি সোহেলী ও লতার কথোপকথন হস্তান্তর করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম নাদেলকে অবহিত করা হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আইসিসির যে প্রটোকল রয়েছে, সেটা অনুসরণ করতে হয় এবং বাংলাদেশ দল থেকেও তাই করেছে। এর গভীরতা ও মেরিট যাচাই করে বাকি পদক্ষেপ আইসিসি নেবে।’
সোহেলীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আকাশ নামে এক জুয়াড়িকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এত দূর গড়াবে, বুঝতে পারিনি। ফেসবুকে পরিচিত হওয়া আকাশ স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি তাকে বলেছিলাম, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটাররা এ রকম কিছু করে না। সেটা প্রমাণ করতেই আমি লতাকে প্রস্তাবটা দিই। লতা সঙ্গে সঙ্গে ভয়েস মেসেজ দিয়ে প্রমাণ করে দেয় মেয়েরা এসবে জড়িত না। আমার কাছে আকাশের সঙ্গে মেসেঞ্জারের সব লেখা রয়েছে। সেগুলো আকসুকে (এসিইউ) দেখাব। যা যা হয়েছে সেগুলো বলব।
এ ধরনের বোকামি করা ঠিক হয়নি। আমি বুঝতে পারছি, আমার শাস্তি হবে। কিন্তু সেটা যত কম হয় সেজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করব আকসুকে (এসিইউ)। বিসিবি সিইও স্যারকেও জানিয়ে রেখেছি যে মিডিয়াতে পুরো ঘটনা আসেনি। উনাদের যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকু রিপোর্টে দেখিয়েছে।’ আইসিসি এসিইউও সদস্যের তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সোহেলী। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া যে শাস্তিমূলক অপরাধ তিনি জানতেন কিনা?
জবাবে সোহেলী বলেন, ‘আমি জানতাম, কিন্তু আকাশের চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছি। ভুলের মাশুল দেওয়া ছাড়া এখন কিছু করার নেই। এসিইউও থেকে স্টিভ নামের একজন ফোন দিয়েছেন, তিনিই কথা বলবেন আমার সঙ্গে।’ ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা জাতীয় দলে খেলেন সোহেলী। মাঝে অনিয়মিত হয়ে পড়লেও গত বছর বিশ্বকাপ বাছাই এবং এশিয়া কাপে খেলেছেন তিনি।