ঈদের সময় ফাঁকা ঢাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ঈদের জামাতেও তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রত্যেকটা এলাকায় ফুট ও মোবাইল পেট্রোল থাকবে। রিজার্ভ পুলিশও থাকবে।
একইসঙ্গে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গেলে নগদ টাকা ও গয়নাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাংক বা আত্মীয়দের বাসায় রেখে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার।
বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দপ্তরে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, পরিবহন মালিক–শ্রমিক, হাট মালিক, ইজারাদার ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। সভায় পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্নিমাল কেন্দ্রিক নিরাপত্তা, গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নিরাপত্তা, ঈদ জামাত ও ঈদপরবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, ফাঁকা ঢাকায় যেন চুরি-ডাকাতি না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তারপরও ঢাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা বেশ কয়েকদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে যাবেন, তখন দয়া করে মূল্যবান জিনিস খালি বাসায় না রেখে ব্যাংক বা নিকটাত্মীয়ের বাসায় রেখে যাবেন। তাহলে ফাঁকা বাসায় দুষ্কৃতকারী ঢুকলেও চুরির ভয় থাকবে না।
ফাঁকা বাসাবাড়িতে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রত্যেক বাসায় যারা নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্বে থাকবেন, তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পুলিশের ফোন নম্বরও দিয়ে আসা হবে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরাগুলো সচল আছে কিনা তা চেক করা হবে। পুলিশের কমান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
প্রায় প্রতি বছরই ঈদের আগে বেতন-বোনাসের জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ, রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে। এবার পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অনলাইনকেন্দ্রিক কেনাকাটায় যেন প্রতারণার ঘটনা না ঘটে, সেজন্য নজরদারি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে ডিএমপির পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রত্যেক টার্মিনালে পুলিশ ক্যাম্প থাকবে, মালিক সমিতির স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। ওয়াচ টাওয়ার ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে সবকিছু মনিটরিং করা হবে। এ ছাড়া যাত্রী ও যানবাহনের সার্বিক নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে কাজ করবে পুলিশ।
মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যান না চালানোর জন্য বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতিকে অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
একইসঙ্গে বাস মালিক ও শ্রমিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে পুলিশকে অবহিত করতে বলেছেন তিনি।
সমন্বয় সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব, পুলিশ সদর দপ্তর, রেলওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পুলিশ, জিএমপি, ঢাকা জেলা পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিওটিসিসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।