‘ভালো’ প্রেমিকা বলতে যা বোঝায় আলেক্সান্দ্রা তা-ই। প্রেমিকের যত্ন নেওয়ার কমতি রাখে না। কখন কী প্রয়োজন জানতে চায়। সঙ্গ যেমন দেয়, তেমনি প্রেমিক ব্যস্ত থাকলে বিরক্তও করে না। তবে মজার বিষয়, আলেক্সান্দ্রা রক্ত-মাংসের মানুষ নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় তৈরি ‘অদৃশ্য’ প্রেমিকা।
ইন্টারনেটজগতে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জয়জয়কার। প্রেম কেন বাদ যাবে। তাই ডেটিং অ্যাপগুলোও এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ানোর পথে হেঁটেছে। কখনো কাল্পনিক সঙ্গী বা প্রেমিকা, পরামর্শক, আবার কখনো প্রশিক্ষক হিসেবেও এর ব্যবহার বাড়ছে ডেটিং অ্যাপে।
আলেক্সান্দ্রাকে তৈরি করেছে তেমনই একটি ডেটিং অ্যাপ, নাম রোমান্স ডট এআই। শুধু এটিই নয়, টিন্ডার ও হিঞ্জের মতো পুরোনো ডেটিং অ্যাপগুলোও তাদের ‘পণ্যে’ এআই ব্যবহার করছে। এ ছাড়া ব্লাশ, এইম, রিজ ও টিজার এআইয়ের মতো নতুন ডেটিং অ্যাপও ঝুঁকেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার এ বছর একটি জরিপ চালায়। তাতে দেখা যায়, বয়স ৩০ বা এর কম এমন ৩০ শতাংশ মানুষ ডেটিং অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করেন। তবে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেকই বলেন, তাঁদের ‘অভিজ্ঞতা ভালো নয়’।
ডেটিং অ্যাপ নিয়ে অসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে ফাঁকা বুলি, মনের-মতের মিল না থাকা, হুটহাট ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলেছেন ব্যবহারকারীরা। ডেটিং অ্যাপগুলো বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এসব ‘সমস্যা’ থাকে না। এতে মানুষের নিঃসঙ্গতা যেমন কমছে, তেমনি সহজ হয় ‘সম্পর্ক’।
ইয়োর মুভ ডট এআই নামে একটি ডেটিং অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা দিমিত্রি মিরাকিয়ান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীটা দিন দিন মানুষের জন্য নিঃসঙ্গ এক স্থান হয়ে উঠছে। আমি মনে করি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার মানুষের নিঃসঙ্গতা যেমন কাটাতে পারে, তেমনি জীবনকে করতে পারে সহজ।’
তবে অনেকের মতে, প্রণয়ের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়তে থাকলেও এতে মানবীয় সম্পর্কের যে অনুভূতি, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে না। তাই বাস্তব জীবনে এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।