গুস্তাখ ইশক’ দিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন ভারতের খ্যাতনামা ফ্যাশন ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রা। বিভু পুরি পরিচালিত মিউজিক্যাল রোমান্টিক ছবিটিতে দেখা যাবে অভিনেতা বিজয় ভার্মা ও ফাতিমা সানা শেখের হৃদয়গ্রাহী রসায়ন। গত সোমবার মুম্বাইয়ের এক মাল্টিপ্লেক্সে অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে ‘গুস্তাখ ইশক’-এর ট্রেলার। ছবিতে আরও আছেন নাসিরুদ্দিন শাহ। ছবির গানও যে উপভোগ্য হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, এই ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন বিশাল ভরদ্বাজ আর কথা লিখেছেন গুলজার।
ফাতিমা সানাকে সাধারণত বহু তারকা–সংবলিত ছবিতে দেখা যায়। কয়েক মাস আগেই যেমন অনুরাগ বসুর ‘মেট্রো ইন দিনো’তে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ‘গুস্তাখ ইশক’–এ তিনিই মূল নায়িকা। ট্রেলার মুক্তি অনুষ্ঠানে নিজের অভিনয়যাত্রা নিয়ে সানা বলেন, ‘নানা ধরনের চরিত্রে কাজ করেছি। ছোটবেলা থেকেই অভিনয় শুরু করেছিলাম, তখন ছিলাম শিশুশিল্পী। আগে ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ভুল ধারণা ছিল যে শিশুশিল্পী নায়িকা হতে পারে না। ক্রমাগত অডিশন দিতে থাকতাম, যাতে সেই ধারণা ভাঙতে পারি।’

টেলিভিশনেও অনেক দিন কাজ করেছেন সানা। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘কাজটা খুব কঠিন ছিল, প্রতিদিন নির্দিষ্ট শিডিউল থাকত, কোনো দিন কাজ না করলে পারিশ্রমিকও পেতাম না। তখনই ঠিক করি, যদি কোনো দিন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাই, কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করব না। এই ছবিতে আমার সহশিল্পীরা দারুণ। নাসিরজি ও মনীশের সঙ্গে কাজ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।’
‘গুস্তাখ ইশক’ পুরোদস্তুর রোমান্টিক ছবি। এ ধরনের একটা ছবিতে কাজ করতে পেরে দারুণ উৎফুল্ল অভিনেত্রী। বাস্তব জীবনের ভালোবাসার প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আমরা বলি না “ফল ইন লাভ”! কারণ, প্রেমে পড়া মানেই নিয়ন্ত্রণ হারানো। যতই বলি, এমন করব না, সীমা রাখব, নিয়ম মানব, কিন্তু প্রেমে পড়লে সব ভুলে যায় মানুষ। ভালোবাসা যদি বিষাক্ত হয়, আমরা তাতেও ডুবে যাই। কারণ, ভালোবাসা মানেই আবেগের সম্পূর্ণ সমর্পণ। আর আমি যখন ভালোবাসি, তখন মনপ্রাণ দিয়েই ভালোবাসি। এই ছবির মাধ্যমে অন্তত সেই অনুভব প্রকাশের সুযোগ পেয়েছি।’

নাসিরুদ্দিন শাহর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রথমে আমি খুব নার্ভাস ছিলাম। ভাবতাম, উনি আমার সম্পর্কে কী ভাববেন—আমি ভালো অভিনেত্রী কি না। কিন্তু উনি খুব বিনয়ী আর অভিজ্ঞ। ওনার সঙ্গে কাজ করার সময় মনে হয়েছিল, আমি মাটির সঙ্গে জুড়ে আছি। অনেক দৃশ্যেই উনি বুঝিয়ে দিয়েছেন কীভাবে ‘পারফরমেটিভ জোন’ থেকে বের হয়ে বাস্তব মুহূর্তে ফিরে আসতে হয়। ওনার থেকে প্রতিদিনই কিছু না কিছু শেখা যায়।’
অনুষ্ঠানে বর্তমানের সম্পর্ক নিয়ে বিজয় ভার্মা বলেন, ‘এখন সবকিছুর সঙ্গে একটা ট্যাগ দেওয়া হয়। কেউ চুপ থাকলে বলে ‘ঘোস্টিং’, কেউ কিছু বললে ‘টক্সিক’। আগে নীরবতা, অপেক্ষা, দেখা আর না দেখা হওয়ার মধ্যেও আনন্দ ছিল, এখন তা হারিয়ে গেছে। যদিও প্রেম আজও একই, শুধু বহিঃপ্রকাশের ধরন বদলে গেছে।’

বিজয়কে এত দিন ডার্ক চরিত্রে বেশি দেখা গেছে। এবার রোমান্টিক চরিত্রে ধরা দিচ্ছেন। অভিনেতা জানালেন, ‘ডার্লিংস, দহাড়-এর মতো গভীর চরিত্রে কাজের পর একটু স্বস্তি দরকার ছিল। এই চিত্রনাট্য হাতে পেয়ে মনে হলো, এটা একেবারে মধুর মতো মিষ্টি। পরিচালকেরা যখন অভিনেতার অচেনা দিক খুঁজে বের করেন, তখনই নতুন কিছু দেখানোর সুযোগ আসে। এই ছবিতে আছে প্রেম, কোমলতা, বাস্তবতা আর জীবনের লড়াই—সব মিলিয়ে এক হৃদয়স্পর্শী গল্প।’
২৮ নভেম্বর বড় পর্দায় মুক্তি পাবে ‘গুস্তাখ ইশক’।

















