প্রশস্ত হচ্ছে সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার সড়ক

0
9
খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়ক সম্প্রসারণ ও বাঁক সরলীকরণের কাজ চলছে। সম্প্রতি তোলা

তিন দশকের বেশি সময় পর খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়ক অবশেষে প্রশস্ত হচ্ছে। সড়কটি দিয়েই খাগড়াছড়ি থেকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত করেন পর্যটকেরা। সরু সড়কটিকে নিরাপদ করতে সম্প্রসারণ ও বাঁক সরলীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবহনচালক ও পর্যটকদের মাঝে।

প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে এই সড়কে। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালার দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার হলেও সরু ও আঁকাবাঁকা সড়কের কারণে এ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। সড়কের প্রশস্ততা মাত্র ১২ ফুট। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘খাগড়াছড়ি সদর থেকে দীঘিনালা বাসস্টেশন পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য দরপত্র ও কার্যাদেশ সম্পন্ন হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে মোট ছয় ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। আশা করছি ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’

রাস্তা এতটাই ছোট যে বড় গাড়ি এলে রাস্তা ছেড়ে নিচে নামতে হয়। দুটি গাড়ি একসঙ্গে চলতে পারে না। বাঁক ও উঁচু-নিচু হওয়ার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক বড় হলে আমাদের কষ্ট কমবে।

—গণেশ ত্রিপুরা, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য

স্থানীয় বাসিন্দা, চালক ও যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে সড়ক প্রশস্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চারমাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খননযন্ত্র দিয়ে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

গত মঙ্গলবার দুপুরে চারমাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক্সকাভেটর দিয়ে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। এক কিলোমিটারের বেশি সড়কের দুই পাশের অংশ প্রশস্ত করা হয়েছে।

দীঘিনালার নয়মাইল এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য গণেশ ত্রিপুরা বলেন, ‘রাস্তা এতটাই ছোট যে বড় গাড়ি এলে রাস্তা ছেড়ে নিচে নামতে হয়। দুটি গাড়ি একসঙ্গে চলতে পারে না। বাঁক ও উঁচু-নিচু হওয়ার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক বড় হলে আমাদের কষ্ট কমবে।’

খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালায় প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন নলিনী চাকমা ও মো. ইকবাল খন্দকার। তাঁরা বলেন, ‘প্রায় প্রতি সপ্তাহে এক-দুইবার দুর্ঘটনা হয়। রাস্তার প্রশস্ততা মাত্র ১২ ফুট। প্রায় সময় বাস ও ট্রাক রাস্তার বাইরে ছিটকে পড়ে। আমরাও ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাই। এখন দুই পাশে তিন ফুট করে ছয় ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে—এটা খুবই স্বস্তির খবর।’

সাজেকগামী পর্যটকবাহী গাড়ি চালান অংগ্যজাই মারমা। তিনি বলেন, ‘এই সড়কে অন্যান্য সড়কের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি গাড়ি চলে। সড়ক বড় হলে চালক ও যাত্রীদের কষ্ট অনেকটাই কমবে।’

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে সাজেক, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার যানবাহন চলাচল করে। অতিরিক্ত বাঁকের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক প্রশস্ত হলে দুর্ঘটনা কমবে এবং চালকেরাও স্বস্তি নিয়ে গাড়ি চালাতে পারবেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.