জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানের। এক সপ্তাহের বেশি সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
অঞ্জনা রহমানের দাফন শেষ হতে না হতেই এলো আর এক মন খারাপের খবর। হাসপাতালে আছেন রূপালী পর্দার নবাব খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। শুরুতে সিসিইউতে থাকলেও রোববার (৫ জানুয়ারি) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সনি রহমান আরটিভিকে বলেন, প্রবীর মিত্র ভাইয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাই রোববার (৫ জানুয়ারি) তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) অভিনেতার বড় ছেলে ছেলে মিঠুন মিত্র জানান, ১০-১২ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তার বাবা। বয়সের সঙ্গে কিছু শারীরিক জটিলতায় গত ২২ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। খারাপ অবস্থার দিকে। ব্লাড লস হচ্ছে, প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।