দেশে বৈধপথে প্রবাসী আয় আসার গতি কিছুটা বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে (১-২০ অক্টোবর পর্যন্ত) ১২৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে প্রবাসী আয় আসার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসবে। এমনকি গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে প্রবাসী আয় বেশি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে দেশে ১৫৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত মাসে (সেপ্টেম্বর) বৈধ পথে দেশে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় আসে, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের এপ্রিলে এত কম প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। ওই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার। ডলার-সংকটের এ সময়ে প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় ডলার-সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী আয় তলানিতে নামার পর ডলার-সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু ব্যাংককে ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনার পরামর্শ দেয়। ফলে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাড়তে থাকে। প্রথম সপ্তাহে ৩২ কোটি, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৪৬ কোটি এবং তৃতীয় সপ্তাহে ৪৭ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে দেশে।
একাধিক ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি মাসের শুরুতে বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, যে দামেই হোক, বেশি প্রবাসী আয় আনতে হবে। এরপর কোনো কোনো ব্যাংক ১১৫-১১৬ টাকা দামে প্রবাসী আয় এনেছে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ আড়াই টাকা বেশি দাম দেওয়া যাবে। ফলে এখন প্রায় এক ডজন ব্যাংক সেই দামে প্রবাসী আয় আনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি দামে ডলার কিনতে এমন সব ব্যাংককে অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়েছে, যাদের মাধ্যমে আগে থেকেই ভালো পরিমাণে প্রবাসী আয় দেশে আসছিল। কিন্তু পরে ডলারের দাম বেঁধে দিয়ে তা মানতে বাধ্য করার কারণে এসব ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা কমে যায়। এসব ব্যাংকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক পাশাপাশি প্রচলিত ধারার ভালো কয়েকটি ব্যাংকও রয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি দামে ডলার কেনার জন্য ১০ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে জরিমানা করেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১০ কোটি এবং দুটি বিশেষায়িত ব্যাংক ৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এনেছে। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এনেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এনেছে যথাক্রমে ট্রাস্ট ব্যাংক (৮.৪৫ কোটি ডলার) ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (৮ কোটি ডলার)।