প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন মান্না-সাকি

0
6
মাহমুদুর রহমান মান্না ও জোনায়েদ সাকি
দেশের চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
 
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
 
বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সরকারকে বলেছি ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সমস্ত চুক্তি খোলাসা করতে হবে। যে সমস্ত চুক্তি আমাদের স্বার্থের পরিপন্থি, সেগুলো বাতিল করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোও এ প্রস্তাব দিয়েছে।
 
তিনি বলেন, সরকারও এ বিষয়ে একমত হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ স্বাধীনভাবেই নিজেদের সম্মান নিয়ে, বন্ধুত্বের সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই। আমরা কারও কাছে মাথানত করব না। জাতীয় স্বার্থে দেশের সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ আছে।
 
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে দেশে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য এখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যের প্রকাশ হিসেবে সারাদেশে জাতীয় পতাকা হাতে সবাই দাঁড়াব। এ বিষয়ে হয়ত দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসবে।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতসহ অনেক দেশের জায়গা থেকে একটা অসত্যের যুদ্ধ চলছে। বলেছি সত্য দিয়ে এই যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। সাম্প্রদায়িক উসকানির বিরুদ্ধে সব ধর্মের সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, দেশের সব অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল গঠন করার বিষয়ে কথা হয়েছে। যাতে সরকার বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রেখে ক্রান্তিকালীন রাজনৈতিক পর্ব থেকে উত্তরণ হতে পারে।
 
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা। এ ছাড়া নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ আরও অনেকে অংশ নেন।
 
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তখন থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
 
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতনসহ বেশ কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এরমধ্যে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও বেড়ে যায়। তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ‘চিন্ময়ের অনুসারীরা’ সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
 
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ২ ডিসেম্বর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা হয়, যাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ হিসেবে বর্ণনা করে ‘ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এসব পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে সংলাপে বসেন প্রধান উপদেষ্টা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.