প্রথম দেখাতেই শহরটির প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম’

0
132
তানজিকা আমীন

ঘুরতে ভালোবাসেন অভিনেত্রী তানজিকা আমিন। সুযোগ পেলেই তাই ছুট দেন দেশ বা দেশের বাইরে। ঘোরাঘুরির গল্প নিয়েই বিস্তারিত জানালেন এই অভিনেত্রী

ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে সব সময়ই। প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য অন্য সবার মতো আমাকেও হাতছানি দিয়ে ডাকে। যে জন্য শুটিংয়ের অবসরে এদিক-সেদিক বেরিয়ে পড়তেও দ্বিধা করি না। আর তা করতে গিয়েই নানা রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। মাঝেমধ্যেই ইচ্ছা জাগে, এই পুরো পৃথিবীটা যদি ঘুরে বেড়াতে পারতাম। তাই তো সময়-সুযোগ পেলে হারিয়ে যাই। দূরে কোথাও পাহাড়-সমুদ্রে। তবে সে রকম সুযোগ কম মেলে। নাটকের শুটিংয়ে দেশের বাইরে গেলে ভ্রমণও সঙ্গে যোগ হয়। কলা বেচা আর রথ দেখার মতো।

এই তো সেদিন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলাম নাটকের শুটিংয়ে। যদিও এর আগে আমি বেশ কয়েকবার এখানে এসেছি। আমার অন্যান্য প্রিয় শহর নিউইয়র্ক, লন্ডন, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর সিটির চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলো অনেকটা আলাদা। যখন শহরটিতে পা রেখেছি, তখন মুহূর্তের মধ্যেই সব ক্লান্তি উধাও হয়ে গেছে। প্রকৃতিও এ দেশে নতুন এক অবয়ব গড়ে দিয়েছে। প্রকৃতি আসলে এমনই– তার সৌন্দর্য দিয়ে আপনাকে এতটা মুগ্ধ করে রাখবে  যে সব কষ্ট, ক্লান্তি আপনি ভুলে যাবেন অনায়াসে।

ঠিক যেভাবে ভুলে গিয়েছিলাম আমি। কয়েক দিন শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। একটু সময় করেই ছুটে বেড়িয়েছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ পেরিয়ে কখনও চলে গেছি সমুদ্রপাড়ে। সেখানের প্রায় সব অঞ্চলই কোলাহলমুক্ত। তার পরও হৈ-হুল্লোড়ের কমতি ছিল না। অস্ট্রেলিয়ায় শাবনূর আপুর সঙ্গে দেখা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো কখনও ভুলতে পারব না। ২২ দিন শুটিং করেছি। এরই ফাঁকে বিভিন্ন বিচে ঘুরেছি।

  • অন্য সবার চেয়ে আমার কাজের সংখ্যা অনেক কম: তানজিকা
  • মুক্ত হাওয়া আর নীল সমুদ্রের হাতছানিতে পার করেছি স্বপ্নের দিনগুলো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেছি অস্ট্রেলিয়ার রঙিন মুহূর্তগুলো। মনে পড়ে, প্রথম দর্শনেই এ শহরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। পুরোনো কিছু স্মৃতি হাতড়ে বেড়িয়েছি। শহরের সমুদ্র, পাহাড়, রোদ আর হাওয়ায় অদ্ভুত সুন্দর সবকিছু। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দায়বদ্ধতাও অসাধারণ। নাটকের কাজ করতে এলেও শিখছি অনেক কিছু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই টানে বেশি আমাকে। যেটুকু সময় পেয়েছি, বেরিয়ে পড়েছি প্রকৃতির সান্নিধ্যে।

পাহাড়, সমুদ্র, অপেরা হাউস– কী নেই সেখানে! সিডনির পুরো জায়গাটাই যেন পাহাড়ঘেরা। শহরটা কেমন  যেন একটু বেশি ঝকঝকে। আকাশও যেন আরও স্বচ্ছ, বেশি উজ্জ্বল। চোখে লাগার মতো একটু বেশি পরিষ্কার সবকিছু। দিনের শহর আর রাতের শহর যেন একটু আলাদা। ঘোরাঘুরির সুযোগ পেয়ে অন্য রকম আনন্দময় সময় কাটিয়েছি। সিডনির প্রতিটি জায়গাই আমার মন কেড়েছে। অপেরা হাউসের সৌন্দর্য দেখে বেশি মুগ্ধ হয়েছি। পুরো সফরে আমাদের একমুহূর্তের জন্যও বোরিং মনে হয়নি। মনে রাখার মতো একটি সফর ছিল ক্যাঙারুর দেশে। কোনো জায়গায় ভ্রমণে গেলে আমি প্রথম চিন্তা করি– সেই জায়গার কী কী বিশেষত্ব আছে, যেগুলো আমার  দেখা উচিত। কেনার মতো কী আছে, তা সংগ্রহ করার চেষ্টা করি।

ভ্রমণে গেলে সেখানকার স্থানীয় খাবারদাবার আমার চাই-ই চাই। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে এখন ঘোরাঘুরির সময় মেলে না। ২০০৫ সালে দেশের বাইরে প্রথম দুবাই ভ্রমণে গিয়েছিলাম।  সবাই ব্যাংকক, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে শুটিংয়ে যায়। আমি এসব দেশে শুটিংয়ে যাইনি কখনও। তবে  বেড়ানোর জন্যই বহুবার গিয়েছি। আমি ভ্রমণবিলাসী মানুষ। লন্ডন সবচেয়ে বেশি পছন্দের। সুযোগ পেলেই মাঝেমধ্যে ছুটে যাই সেখানে। দেশটাই অন্য রকম। সেখানে যেতে বারবার মন চায়। অনেকের কাছে ভ্রমণ মানে খুব সকালে বাসা থেকে বের হওয়া। সারাদিন টইটই করে ঘোরা। ক্লান্তি নিয়ে ফেরা। কিন্তু আমার এসব ভালো লাগে না। আমার কাছে ভ্রমণ মানে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম। হাতে সময় নিয়ে সবকিছু ঘুরে দেখা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.