প্রথম চলচ্চিত্রেই দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার

0
11
এটি ফ্লোরার প্রথম চলচ্চিত্র

বাঙালি বা বাংলাদেশের সমাজে গর্ভধারণ করা নারীকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানানোর ঘটনা সচরাচর চোখে পড়ে না। ‘ভয়েড অ্যান্ড ব্লিডিং’ চলচ্চিত্রটির প্রথম সংলাপ, ‘কনগ্রাচুলেশন ফর ইয়োর প্রেগন্যান্সি’। যেন অন্য কোনো সমাজের ছবি।

ভয়েড অ্যান্ড ব্লিডিং—১৬ মিনিটের এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এর পরিচালক ফাহমিদা জামান সুইডেনের স্টকহোম সিটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা নারী চলচ্চিত্র নির্মাতার সম্মান পেয়েছেন। রাশিয়ার মস্কো ইনডাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শব্দে সেরা পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও ভারতের কেরালা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে। এটি ফ্লোরার প্রথম চলচ্চিত্র।

কাহিনিটি পরিচিত গণ্ডির বাইরের। বলা যায় গণ্ডি পেরিয়ে। নারী সে উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্ত যে স্তরেরই হোক অবহেলা তার পায়ে-পায়ে। রাজধানীর গুলশানে স্বামীকে নিয়ে চাকচিক্যের মধ্যে থাকলেও শ্রেয়ার জীবন বাংলাদেশের যেকোনো শ্রেণির নারীর মতোই। গর্ভধারণ শ্রেয়ার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। স্বামীর সময় অল্প, ব্যস্ততা বেশি। মন খারাপ, শরীর খারাপ বা অন্য কোনো কারণে ফোন করলেই ওপার থেকে আওয়াজ আসে, সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ম্লানমুখে, শূন্যতার মধ্যে দিন কাটে।

জটিলতা আরও প্রকট হয়ে চোখে পড়ে শ্রেয়ার এক গোপন সম্পর্কের দৃশ্য। সামিরা নামের এক নারীর সঙ্গে বিয়ের আগেই তার সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও সে সম্পর্ক পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ইউরোপ-আমেরিকায় এই সম্পর্কের দৃশ্য দর্শকে উদ্বিগ্ন করে না। সাধারণ বাঙালি সমাজও অন্য পুরুষের সঙ্গে শ্রেয়ার সম্পর্ক জেনে কপালে চোখ তোলা হয়তো বন্ধ করেছে। তবে উচ্চবিত্ত বাঙালি সমাজে পরিচালকের দেখানো সম্পর্ক কতটা স্বাভাবিক হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে হয়তো।

গর্ভবতী শ্রেয়ার জার্নিটা বেশ জটিল। অবসরে কাছে থাকে পোষা বিড়াল। বড় আদরের বিড়ালটিও একসময় চোখের আড়াল হয়। বিড়ালটির ছবি দেখা যায় ম্যাগাজিনে। ক্যাট লাইফ—এমন দৃশ্য দেখিয়ে শেষ হয় চলচ্চিত্র। কথা বা সংলাপ খুবই কম।

স্বল্পদৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্র দেশের কোথাও এখনো দেখানো হয়নি। এপ্রিল বা মে মাসের কোনো এক সময় কিছুটা জাঁকজমক করে প্রথম প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে পরিচালকের।
ফাহমিদা জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার গর্ভধারণের ছয় মাসের সময় শুটিং হয়। কাহিনি আমার। আমি নিজে যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তার কিছুটা প্রতিফলন আছে এতে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.