ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৎপরতার মধ্যে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল সোমবার তাঁর দেওয়া এ ঘোষণা নিয়ে সন্তুষ্ট ওয়াশিংটন। তবে তারা জানিয়েছে, ইউক্রেনের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চান ট্রাম্প। একই দাবি কিয়েভেরও।
পুতিনের ঘোষণা করা এই যুদ্ধবিরতি চলবে আগামী ৮ মে মধ্যরাত থেকে ১১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। মস্কো জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ‘মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সব ধরনের সামরিক হামলা বন্ধ রাখা হবে।’ প্রতিবছর ৯ মে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন করে রাশিয়া। একই দিনে নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করার ৮০তম বার্ষিকীও উদ্যাপন করবে দেশটি।
ক্ষমতায় বসার পর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন—দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করছে তাঁর প্রশাসন। তবে অগ্রগতি তেমন এসেছে বলে মনে হয়নি। এরই মধ্যে গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, এই শান্তিচুক্তির মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র আর থাকবে কি না, তা নির্ধারণ করার জন্য চলতি সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পুতিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রিয়ান হিউজেস সোমবার বলেন, সংঘাত থামাতে ভ্লাদিমির পুতিন যে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে তিনি একটি স্থানীয় যুদ্ধবিরতি চান এবং এই যুদ্ধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চান।
সোমবারেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তিন দিনের যুদ্ধবিরতির সমালোচনা করে বলেন, এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা ‘একটি প্রতারণার চেষ্টা’। আর ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিহা বলেছেন, ‘রাশিয়া যদি সত্যিকার অর্থেই শান্তি চায়, তাহলে তাদের এখনই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। ৮ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কেন? ইউক্রেন একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি করতে প্রস্তুত।’
এর আগে খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইস্টার সানডে উপলক্ষে ১৯ এপ্রিল ৩০ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেও সেদিন ২ হাজার ৯০০টি হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের বিরুদ্ধেও সেদিন রাশিয়ায় হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এমন পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক দিন শান্তি আলোচনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোববার সংবাদমাধ্যম এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আমরা (শান্তিচুক্তির) কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। তবে একেবারে কাছে নয়।’
সিএনএন