বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ হতে পারে বলে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যে মন্তব্য করেছেন, তাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ বলে মনে করেন সাংবাদিকনেতারা। তাঁরা বলছেন, পিটার হাসের এই বক্তব্য গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের শামিল। এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর বরখেলাপ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবাদী সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা এসব কথা বলেন। ‘ভিসা নীতির নামে সংবাদমাধ্যমে মার্কিন চাপের প্রতিবাদে’ এই সাংবাদিক সমাবেশের আয়োজক ‘জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট’ নামের একটি সংগঠন। সমাবেশটি প্রথমে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে শুরু হয়। তবে বৃষ্টির কারণে পরে সমাবেশটি হয় প্রেসক্লাবের তিনতলায় অবস্থিত আবদুস সালাম মিলনায়তনে।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিকনেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীন ভূমিকা ও মর্যাদা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের শামিল। ভিসা নীতির নামে হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা প্রভু চাই না, বন্ধু চাই।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপরে চাপ। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীরও বরখেলাপ।
মনজুরুল আহসান বুলবুল আরও বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে মার্কিন ভিসার জন্য প্রায় এক লাখ মানুষ আবেদন করেন। কিন্তু ভিসা পান প্রায় ২৭ হাজার মানুষ। তার মানে, একধরনের ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের আছেই। আজকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ভিসা নীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য যেকোনো ধরনের লোভ ও হুমকি থেকে রক্ষা পেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাস্টিস ফর জার্নালিস্টের সহসভাপতি ওবায়দুল হক খান। বক্তব্য দেন সাংবাদিকনেতা আবদুল জলিল ভূঁইয়া, কুদ্দুস আফ্রাদ, লায়েকুজ্জামান, মানিক লাল ঘোষ, খায়রুল আলম, আবু সাঈদ, শাহীন বাবু, শাহজাহান সাজু প্রমুখ।
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত ২৪ মে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘোষণার প্রায় চার মাস পর গত ২২ সেপ্টেম্বর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ শুরু হয়েছে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, গণমাধ্যমও মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আসতে পারে।