আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে সামরিক হামলার ঘটনায় আমি ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। যা ঘটেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। এটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, সেখানে আগুন নিয়ে খেলছে দুই পক্ষ।’
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এনারহোদার শহরে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। গত মার্চে হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ছয়টি চুল্লির একটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। তবে বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায় কেন্দ্রটি। তখন থেকে কেন্দ্রটি রুশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সেখানকার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত শনিবার ও রোববার জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানায় আইএইএ। তবে বিস্ফোরণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি বিবৃতিতে জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আইএইএর প্রতিনিধিদল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিদর্শন করবে।
যা ঘটেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। এটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, সেখানে আগুন নিয়ে খেলছে দুই পক্ষ
এদিকে জাপোরিঝঝিয়ায় হামলার ঘটনায় পরস্পরকে দুষেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউক্রেনের সেনারা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে গোলা ছুড়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত আণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটম সোমবার এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, জাপোরিঝঝিয়ায় একটি বিপর্যয় ঘটাতে চায় ইউক্রেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনের পারমাণবিক জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এনার্জোয়েটমের অভিযোগ, এ কাজের পেছনে জড়িত রুশ বাহিনী। ইউক্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করতেই তারা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে হামলা করেছে।
সহায়তা বাড়াচ্ছে ইউরোপ
চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ–অস্ত্রসহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এ ধারাবাহিকতায় ইউক্রেনের সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য স্পেনের তোলেদা শহরে নতুন একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। সোমবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর এক বৈঠকে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্যদিকে ইতালি সরকার দেশটির আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে নতুন একটি আইন পাস করতে আহ্বান জানিয়েছে। এই আইনের আওতায় দেশটি ২০২৩ সালের মধ্যে ইউক্রেনকে সরাসরি সামরিক ও বেসামরিক সহায়তা দিতে পারবে। সোমবার এক সাক্ষাৎকারে ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো এই আহ্বান জানান।
৪৭০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া
গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে ৪ হাজার ৭০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া। রোববার এক ভিডিও বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থানে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। শুধু গত রোববারই পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রায় ৪০০টি অবস্থানে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে।