পারমাণবিক অস্ত্র না বানানোর চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা ইরানের

0
8
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাই

বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রবিস্তার রোধে গঠিত আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘নন-প্রোলিফিরেশন ট্রিটি’ (এনপিটি) থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এ লক্ষ্যে একটি বিল উত্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির পার্লামেন্ট।

সোমবার (১৬ জুন) এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাই। বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।

ইসমাইল বাকাই বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে। এ লক্ষ্যে সরকার ও পার্লামেন্ট একযোগে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৬৮ সালে এনপিটি স্বাক্ষরিত হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ। পরে ১৯৭০ সালে ইরান এনপিটি স্বাক্ষর করে। এখন পর্যন্ত ১৯১টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

এই চুক্তি অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, এবং ফ্রান্স ব্যতীত অন্য কোনো দেশ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। তবে জাতিসংঘের নজরদারিতে তারা পারমাণবিক উপায়ে শক্তি উৎপাদন করতে পারবে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানের বিরুদ্ধে এনপিটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। ইসরায়েলের দাবি, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে ইরানে বড় ধরনের বিমান হামলা চালায় তেলআবিব।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল কখনোই এনপিটি-তে যোগদান করেনি। এমনকি তাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকার ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক ধারণা থাকলেও, দেশটি কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তা স্বীকার করেনি।

অপরদিকে ইরানের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে জায়নিস্ট শাসকগোষ্ঠী। ইসরায়েল অবৈধভাবে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেছে এবং এর মাধ্যমে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি সত্যিই এনপিটি থেকে বেরিয়ে যায়, তবে তা হবে পরমাণু কূটনীতিতে এক নতুন উত্তাল অধ্যায়ের সূচনা, যা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়—বিশ্ব রাজনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.