অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় আবারও রেললাইন বেঁকে গেছে। এই বেঁকে যাওয়া রেললাইনে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে এবং পানি ঢেলে তাপমাত্রা কমিয়ে লাইন সোজা রাখার চেষ্টা করেন রেলকর্মীরা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম। তবে আপলাইনে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ থাকলেও ডাউনলাইন দিয়েই দুই লাইনের ট্রেন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। রাতে উভয় লাইনেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, গত বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত তাপমাত্রায় রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত আরসিসি স্লিপারের স্থলে কাঠের স্লিপার থাকার কারণে আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনার পর পরই রেল বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেরামত কাজ শুরু করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আরও বলেন, সকাল পৌনে ১০টার দিকে আপলাইন দিয়ে উপকূল এক্সপ্রেস ঢাকায় যায়। এরপর সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়েছি তীব্র গরমে সেই লাইনটি আবার বেঁকে গেছে। বাঁকা হওয়া লাইন দিয়ে ঢাকাগামী ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ থাকলেও ডাউনলাইন দিয়েই ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটগামী ট্রেনগুলোর চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
আপলাইন বন্ধ থাকায় সদর উপজেলার তালশহর স্টেশন পর্যন্ত আপলাইনের ট্রেনগুলোকে সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর জন্য লোকোমাস্টারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বিকেলে ঘটনাস্থল দাড়িয়াপুরে রেলের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান আহমেদ তারেক জানান, গত বৃহস্পতিবার লাইন বেঁকে যাওয়ার সময় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আরসিসি স্লিপার নষ্ট হয়ে যায়। এসব ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের স্থলে জরুরি ভিত্তিতে কাঠের স্লিপার বসিয়ে ট্রেন চালু করা হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ট্র্যাক বাঁকা হওয়ার সময় ট্র্যাক টান দিলে এসব কাঠের স্লিপার ওই টান প্রতিরোধ করতে পারে না। তাই এসব কাঠের স্লিপারের বদলে নতুন আরসিসি স্লিপার বসানো হচ্ছে। একই সঙ্গে কচুরিপানা দিয়ে পানি ঢেলে ট্র্যাক শীতল করার চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।
তবে আপলাইন ফের বেঁকে যাওয়ায় গত দু’দিন আগে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় শেষ না হতেই গতকাল ফের লাইন বাঁকা হয়। এ কারণে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় আবার প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. খায়রুল কবিরকে প্রধান করা হয়েছে।