পাকিস্তান তো এমনই, ১৬ ওভারে ২০০ পেরিয়ে রেকর্ড জয়

0
8
শুরুতে ৩ ছক্কা ৪ চারে ঝোড়ো শুরু এনে দেন মোহাম্মদ হারিস। এএফপি

আগের দুই টি–টোয়েন্টিতেই আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচেই অমন বাজে শুরু করা হাসান নেওয়াজ আজ পুরোপুরি ভিন্ন খেলোয়াড়। যেমনটা ভিন্ন প্রথম দুই ম্যাচে হেরে যাওয়া পাকিস্তান দলও।

অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সিরিজের তৃতীয় টি–টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের ২০৪ রান তাড়ায় পাকিস্তান জিতেছে ২৪ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দুই শতাধিক রান তাড়ায় ১৬ ওভারের মধ্যে ম্যাচ জয়ের ঘটনা এটিই প্রথম।

এই সিরিজেই অভিষেক হওয়া নেওয়াজ খেলেছেন ৪৫ বলে ১০৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। যে সেঞ্চুরির পথে ভেঙেছেন পাকিস্তানের হয়ে বাবর আজমের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৩৫ রানের বেশি তুলতে না পারা পাকিস্তান আজ তৃতীয় ম্যাচে রান তাড়ায় লক্ষ্য পেয়েছিল ২০৫। উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ হারিস ও নেওয়াজ প্রথম ৫ ওভারেই তুলে ফেলেন ৬৭ রান।

শুরুতে ৩ ছক্কা ৪ চারে ঝোড়ো শুরু এনে দেন মোহাম্মদ হারিস।এএফপি

হারিস ২০ বলে ৪১ রান করে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আউট হলেও নেওয়াজ টিকেছিলেন শেষ পর্যন্ত। ক্রাইস্টচার্চ ও ডানেডিনে ৫ বল খেলেও রান করতে না পারা এই ওপেনার আজ প্রথম বাউন্ডারি মারেন তৃতীয় ওভারে।

পরের ওভারে কাইল জেমিসনকে চার ও ছয় মেরে যে হাত খোলা শুরু করেন, আর থামেননি।

প্রথম উইকেটে হারিসের সঙ্গে ৭৪ রানের পর দ্বিতীয় উইকেটে সালমান আগার সঙ্গে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১৩৩ রানের জুটি। এর মধ্যে ৩০ বলে ৭৫ রানই তোলেন নেওয়াজ।

২৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করা নেওয়াজ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৪তম বলে। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে কোনো পাকিস্তানির দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। এত দিন দ্রুততম ছিল বাবর আজমের ৪৯ বলে সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরিয়নে ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

দ্রুততম সেঞ্চুরিতে বাবর আজমের রেকর্ড ভেঙেছেন হাসান নেওয়াজ, এএফপি

নেওয়াজ দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে জেমিসনকে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে। এর পরের বল থার্ড ম্যান দিয়ে বাউন্ডারি পার করিয়ে নিশ্চিত করেন পাকিস্তানের জয়।

আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এর আগে দুই শতাধিক রান তাড়ায় দ্রুততম জয় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৭ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০৫ রান দক্ষিণ আফ্রিকা টপকে গিয়েছিল ১৭.৪ ওভারে, মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে।

রেকর্ড গড়া জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে নতুন করে প্রাণ সঞ্চারও করল পাকিস্তান। আপাতত নিউজিল্যান্ড এগিয়ে ২–১ ব্যবধানে।

এর আগে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামা নিউজিল্যান্ডও ব্যাটিংয়ে ভালো করেছে। প্রথম ওভারে ফিন অ্যালেনকে শাহিন শাহ আফ্রিদি ফিরিয়ে দিলেও মার্ক চ্যাপম্যান প্রায় একা হাতেই নিউজিল্যান্ডকে বড় রানের দিকে টেনে নিয়ে যান।

শাহিন আফ্রিদি নেন ২ উইকেট।এএফপি

১৩তম ওভারে আফ্রিদির আরেক শিকার হওয়ার আগে এই বাঁহাতি ৪৪ বলে করে যান ৯৪ রান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান আসে মাইকেল ব্রেসওয়েলের ব্যাট থেকে।

কিউইরা শেষ ৬ ওভারে ৫৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে না ফেললে পুঁজিটা হয়তো আরও বড় হতো। তবে যে ম্যাচে পাকিস্তান ১৬ ওভারে দুই শ তাড়া করে ফেলে, সে ম্যাচে তা কাজে লাগত কি না, কে জানে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড: ১৯.৫ ওভারে ২০৪ (চ্যাপম্যান ৯৪, ব্রেসওয়েল ৩১, সেইফার্ট ১৯; রউফ ৩/২৯, আব্বাস ২/২৪, শাহিন ২/৩৬, আবরার ২/৪৩)। পাকিস্তান: ১৬ ওভারে ২০৭/১ (নেওয়াজ ১০৫*, সালমান ৫১*, হারিস ৪১; ডাফি ১/৩৭)। ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হাসান নেওয়াজ। সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.