পাঁচ বছর অপেক্ষার পর পটুয়াখালীর তরুণকে বিয়ে করলেন ইন্দোনেশিয়ার তরুণী

0
137
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার খাজুরবাড়িয়া গ্রামে ইমরানের বাড়িতে গতকাল বুধবার রাতে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর বিয়ে করার জন্য ইমরানের কাছে এসেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার তরুণী নিকি উল ফিয়া। তখন ইমরানের বিয়ের বয়স না হওয়ায় তাঁকে ফিরে যেতে হয়। পাঁচ বছর পর গত সোমবার আবারও বাংলাদেশে আসেন তিনি। গতকাল ভোরে ইমরানের বাড়িতে এসে পৌঁছান নিকি। এরপর দুজনে পটুয়াখালী আদালতে গিয়ে বিয়ে করার ঘোষণা দেন।

ইমরান হোসেন ও নিকি উল ফিয়ার। ছবিটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের

ইমরান হোসেন ও নিকি উল ফিয়ার। ছবিটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের

বিয়ে ঘিরে ইমরানের বাড়িতে কয়েক দিন ধরে চলছে উৎসব। তাঁদের দেখার জন্য আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় জমান। গতকাল বিয়ের পর তাঁদের দুজনকে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ইমরানের বাবার নাম দেলোয়ার হোসেন। মায়ের নাম মোছা. বীথি। দুই ভাইয়ের মধ্যে ইমরান বড়। ছোট ভাই মো. শান্ত হোসেন এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী। ইমরান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

৫ বছর অপেক্ষার পর বিয়ের জন্য বাংলাদেশে আসছেন ইন্দোনেশিয়ার তরুণী

ইমরান বলেন, ২০১৬ সালে ফেসবুকে ইন্দোনেশিয়ার মেয়ে নিকির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব, একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকায় ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসেন নিকি উল ফিয়া। সেখান থেকে ইমরান নিকিকে তাঁর বাউফলের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তখন তাঁর ২১ বয়স বছর না হওয়ায় বিয়ে করতে পারেননি। এ কারণে ফিরে যান নিকি।

১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়িয়েছেন মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম

১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়িয়েছেন মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম

বর্তমানে ইমরানের বয়স ২৫ বছর। আর নিকি উল ফিয়ার বয়স ২৩ বছর। নিকি ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া প্রদেশের জেম্বার এলাকার বাসিন্দা ইউলিয়ানতোর মেয়ে। তাঁর মায়ের নাম স্রিআনি।

ইমরানের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিকি চলে যাওয়ার পর আমার ছেলে ও আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে। আমাদের সঙ্গে ওর মা–বাবারও হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে নিয়মিত কথা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি।’ ইমরানের মা বলেন, ‘আমার মেয়ে নেই। ছেলের বউকেই মেয়ের মতো আদর ও ভালোবাসা দেব।’

বিয়ের পর অভিব্যক্তি জানতে চাইলে ইমরান ও নিকি বলেন, তাঁরা খুবই আনন্দিত, যা বলে বোঝানো যাবে না। তাঁরা দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুন্দরভাবে কাটানোর জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

ইমরানের দাদা সিদ্দিক হাওলাদার বলেন, ‘জীবনে অনেক প্রেমের কাহিনি শুনেছি। কিন্তু প্রথমে বিয়ে করতে এসে ফিরে যাওয়ার পাঁচ বছর পর আবার কোনো বিদেশি মেয়ে এসে বাংলাদেশি কোনো ছেলেকে বিয়ে করেছে—এমন প্রেমকাহিনি শুনিনি। এমন বিয়েতে সাক্ষী হতে পেরে খুবই আনন্দিত।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.