পাঁচ দিনের মধ্যেই জনসমর্থনে ট্রাম্পের কাছাকাছি চলে এসেছেন কমলা

0
51
কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প, ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য নতুন প্রার্থী কমলা হ্যারিস গতকাল বৃহস্পতিবার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউসটনে শিক্ষক ইউনিয়নের সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে তিনি ‘ভবিষ্যতের জন্য লড়াই’–এর প্রতিশ্রুতি দেন। মাত্র পাঁচ দিনের নির্বাচনী প্রচারে তাঁর এই তৎপরতার প্রভাব দেখা যাচ্ছে জনমত জরিপেও। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জনসমর্থনের ব্যবধান দিন দিন কমে আসছে।

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিপক্ষে ট্রাম্প যতটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন, সেটা ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত প্রার্থী হিসেবে কমলার নাম আসার পর রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জন্য চ্যালেঞ্জটা সত্যিকার অর্থে কঠিন হয়ে উঠছে।

হিউসটনে আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচারসের সমাবেশে বক্তৃতায় ৫৯ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস অর্থনৈতিক নীতি ও শ্রমিকদের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও শিশু পরিচর্যার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একের পর এক গুলির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসে উত্থাপিত অস্ত্র আইন আটকে দেওয়ার জন্য রিপাবলিকানদের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।

কমলা বলেন, ‘আমাদের লড়াই ভবিষ্যতের জন্য। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ মৌলিক স্বাধীনতা নিয়ে লড়াইয়ের মধ্যে আছি।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত রোববার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে রয়টার্স/ইপসসসহ বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আগামী সাড়ে তিন মাস ট্রাম্প আর কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচার দুজনের জন্যই বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজ জাতীয় জরিপে দেখা যায়, ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এই জরিপে ৪৮ শতাংশ মার্কিন ভোটার ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ কমলাকে সমর্থন জানান।

অথচ জুলাইয়ের শেষ দিকে একই প্রতিষ্ঠানের করা জরিপে ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ শতাংশ ও বাইডেনের প্রতি ৪১ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন। অবশ্য ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাইডেন খারাপ করার পর ওই জরিপ চালানো হয়েছিল।

দেশব্যাপী জনমত জরিপ মার্কিন নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যের ফলাফল ইলেকটোরাল ভোটারের পুরো হিসাব–নিকাশ পাল্টে দিতে পারে। ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, সেটা অনেকটা নির্ভর করে এই কয়েকটি রাজ্যের ভোটের ওপর।

এদিক থেকে ইমারসন কলেজ/দ্য হিল পরিচালিত জরিপ কমলার আশা জাগিয়ে তুলছে। গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান রাজ্য আরিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে ট্রাম্পের সঙ্গে কমলার ব্যবধান কমে আসছে। উইসকনসিন ছাড়া বাকি পাঁচ রাজ্যে কমলার চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। উইসকনসিনে দুজনে সমানে সমান।

রিপাবলিকানদের জাঁকজমকপূর্ণ জাতীয় সম্মেলনের পর এসব রাজ্যে ট্রাম্পের সমর্থন যেভাবে বাড়বে বলে তাঁর নির্বাচনী শিবির থেকে আশা করা হচ্ছিল, তেমনটি হয়নি। এ জন্যই কিনা গত বুধবার রাতে নির্বাচনী সমাবেশ থেকে শুরু করে ট্রাম্প অনবরত কমলার সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবারও ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যমে তাঁর অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘আমরা মার্ক্সবাদী একজন প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত নই। মিথ্যাবাদী কমলা একজন কট্টর বামপন্থী মার্ক্সবাদী।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.