পশ্চিম বাংলায় আবারও অপরাজেয় দিদি

0
69
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

লোকসভা নির্বাচনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বড় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। হার হয়েছে বিরোধী দলগুলোর অনেক বড় নেতারও। রাজ্যটির ৪২টি লোকসভা আসনের ২৯টিতে জয় পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। এতে পশ্চিমবঙ্গে প্রধান দল হিসেবেই থাকছে তারা। বিজেপি জিতেছে ১২টি আসনে। একটি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। সিপিএম কোনো আসন পায়নি। বিভিন্ন বুথফেরত জরিপে বিজেপিকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তৃণমূল ২০টির কম আসন পাবে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ জরিপকে ‘ভুয়া’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন এবং অধিক সংখ্যক আসন পাবেন বলে জানান।

বিজয়ী তারকা প্রার্থীদের মধ্যে তৃণমূল নেতা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি ডায়মন্ড হারবার থেকে, মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর থেকে, ইউসুফ পাঠান বহরমপুর থেকে, সায়নী ঘোষ যাদবপুর থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। বলিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী পরাজিত হয়েছেন। তিনি ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়েন। হেরে গেছেন বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপিত দিলীপ ঘোষও। বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকে তিনি নির্বাচনে লড়েছিলেন। হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চ্যাটার্জি। তৃণমূল নেতা অভিনেতা দেব (দীপক অধিকারী) তাঁর নির্বাচনী আসন ঘাটাল থেকে সহজ জয় পেয়েছেন। এটা তাঁর সংসদ সদস্য হওয়ার হ্যাটট্রিক। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৯ সালে তিনি পরপর দুইবার নির্বাচিত হন। জয় পেয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী সাবেক ক্রিকেটার কীর্তি আজাদও।

ভোটের ফল প্রকাশের আগে যখন বুথফেরত জরিপে তৃণমূলের কম আসন পাওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছিল, তখন নেতাকর্মীকে শক্ত থাকতে বলেছিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক। তিনি দলের প্রার্থী ও জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন। এ বৈঠকে তিনি দৃঢ় থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, তৃণমূল কমবেশি ৩০টি আসনে জিতবে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের এ জয় অভিষেকের উজ্জ্বল রাজনৈতিক ভবিষ্যতেরও ইঙ্গিত বলে মনে করেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এ ফলাফল তাঁকে সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনে ভোট হয়েছে সাত দফায়। প্রত্যেক দফায় বিজেপি নেতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসে প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্যও দিয়েছেন। কিন্তু এসবের পরও শেষ রক্ষা হলো না।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে সাংগঠনিক কাজে জোরালোভাবে অংশ নিতে শুরু করেন তৃণমূল নেতা অভিষেক। প্রার্থী ঠিক করা, প্রচারের নকশা আঁকা, পুরো পশ্চিমবঙ্গ ছুটে বেড়ানো— সবই করেছেন তিনি। অনেকের বক্তব্য, বিজেপির হয়ে অনেকটা একই রকম ভূমিকা নেন শুভেন্দু অধিকারী। যে কারণে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দু’জনের তুলনা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। দু’জনের জন্য এ ভোট ছিল পরীক্ষা। এতে অভিষেক পাস করলেও শুভেন্দু উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এ অবস্থায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।
আর বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ তো এখন সবহারা। আগেই দলের রাজ্য সভাপতির পদ হারিয়েছিলেন। এবার সংসদ সদস্য পদও হারালেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.