‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পছন্দে এগিয়ে পয়লা বৈশাখ

0
202

‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য বেছে নেওয়া হবে বিশেষ দিন। এই দিবস নির্ধারণে বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে গতকাল মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৈঠকে উপস্থিতদের পছন্দের তালিকায় এগিয়ে রয়েছে পয়লা বৈশাখ। এছাড়া তালিকায় অক্ষয় তৃতীয়া, রাখি পূর্ণিমার মতো দিন যেমন রয়েছে, তেমনই আলোচনায় উঠে এসেছে ১৫ আগস্ট, ২৩ জানুয়ারি, এমনকি বঙ্গভঙ্গ রদের ঐতিহাসিক দিন ১২ ডিসেম্বরও। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পছন্দ নিয়ে বৈঠকে ঐকমত্য না হলেও অপছন্দের বিষয়টিতে একবাক্যে সহমত হয়েছেন সবাই। অপছন্দের তালিকায় প্রথমের রয়েছে ২০ জুন। তারিখটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে মানতে আপত্তি জানিয়েছে ‘হিন্দু মহাসভা’ও।

মঙ্গলবার নবান্নের সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার তরফে চন্দ্রচূড় গোস্বামী। তিনি বলেন, আমাদের দলের ইতিহাস রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের থেকেও পুরোনো। আমরা প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। তবে আমরা মনে করি, ২০ জুন কখনোই পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করা যায় না। কারণ, এই দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে বাঙালির বেদনার ইতিহাস।

বিজেপি যে দলের আদর্শপুষ্ট বলে মনে করা হয়, সেই আরএসএসেরও আদি দল হিন্দু মহাসভা এভাবে তৃণমূল শাসিত সরকারের সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়ানোয় বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত ২০ জুন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তবে ওই দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে, পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে এই আয়োজন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে ওই দিনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন রাজ্যপাল। এর পাল্টা জবাব দিতে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়। আহ্বায়ক করা হয় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই কমিটির বৈঠকে পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করার সুপারিশও করা হয়েছিল। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, বাংলার বিভিন্ন মহলের বিশিষ্টজনদের ডেকে এ ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হবে। মঙ্গলবার নবান্নে সভাঘরে তাই ডাকা হয়েছিল বৈঠক।

প্রায় দুই ঘণ্টার আলোচনায় অবশ্য কোনো নির্দিষ্ট দিন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ওই বৈঠক থেকে উঠে আসা প্রস্তাবগুলো নিয়ে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন সভায় উপস্থিত বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৈঠকে বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত হলেও রাজনৈতিক দল হিসেবে সিপিএম, কংগ্রেস বা বিজেপির কোনো প্রতিনিধি আসেননি। এসইউসি ও সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর প্রতিনিধি এসেছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.