পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার শর্তে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপনের প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। একনেকে অনুমোদন হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করতে হবে। মূলত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে এই শর্ত দেওয়া হয়।
আজ রোববার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা হয়। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রকল্পটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫১৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের মে মাস থেকে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বুড়ি পোতাজিয়ায় ১০০ একর জমিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে এই প্রকল্প নেওয়া হয়। এর আগে গত মে মাসে প্রকল্পটি পাসের একনেকে উঠেছিল, তখন তা আবার পর্যালোচনার জন্য ফেরত পাঠানো হয়।
তবে পরিবেশবিদ ও পানি বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, প্রকল্প এলাকাটি চলনবিলের শেষ অংশে অবস্থিত। এখানে মিলিত হয়েছে শতাধিক খাল, বিল, বড়াল নদসহ অর্ধশতাধিক নদীর পানি। এসব উৎস থেকে আসা পানির সম্মিলিত প্রবাহ গিয়ে মিলিত হয় যমুনা নদীর সঙ্গে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হলে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রকল্প এলাকাটি চারণভূমি ছিল। ২০১৮ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় অকৃষি জমি হিসেবে ছাড়পত্র দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণে অনাপত্তি সনদ দেয়। তখন বলা হয়েছিল, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিতে হবে। এখন সেই শর্ত পূরণের শর্ত দিয়ে প্রকল্পটি পাস করা হয়। তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে পরিবেশবিদদের অনেক কথা আছে। এখন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তারা পুরো বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।
একনেক বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি একনেকের তালিকায় চার নম্বরে ছিল। প্রকল্প প্রস্তাবনা সভায় উপস্থাপন করা হলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আপত্তি তোলেন। এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। পরিবেশ উপদেষ্টা নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন। পরে কয়েকজন উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার শর্তে আপাতত একনেকে প্রকল্পটি পাস হোক। পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে দুই মাস বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
গতকালের একনেক সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। এতে ১১টি প্রকল্প পাস হয়।