পদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে ৫০ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড়, ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি

0
14
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীর বাহিরচর কলা বাগান এলাকায় এক জেলের জালে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের বিশাল এই বাগাড় মাছটি ধরা পড়ে

রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন বিশাল এক বাগাড় মাছ। শনিবার বিকেলে স্থানীয় জেলে সিদ্দিকুর রহমানের জালে বাগাড়টি ধরা পড়ে। বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে আনলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় কেনেন। পরে বিকেলেই তিনি ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

স্থানীয় মৎস্যজীবী ও জেলেরা জানান, পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে থাকায় মাঝেমধ্যে জেলেদের জালে রুই, কাতলা, পাঙাশ ও বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলে সিদ্দিকুর রহমানসহ অনেকে শনিবার দুপুরে পদ্মা নদীতে মাছ শিকারে জাল ফেলেন। ফেরিঘাটের অদূরে বাহিরচর কলারবাগান এলাকায় জেলে সিদ্দিকুর রহমান জাল ফেলেন। কিছুক্ষণ পর কয়েকটি ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন বড় কিছু আটকা পড়েছে। বেলা তিনটার দিকে সঙ্গীদের নিয়ে জাল নৌকায় তুলতেই দেখেন বিশাল আকারের এক বাগাড়।

বাগাড়টি টেনে নৌকায় তুলতে তাঁদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। অনেক কষ্টে নৌকায় তুলে বিক্রির জন্য আনেন দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটে। বিশাল বাগাড় ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে ফেরিঘাটে ভিড় করেন উৎসুক অনেকে। রেজাউল মন্ডলের আড়তে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা মাছটি কেনেন।

মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে আনলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় কেনেন। পরে শনিবার বিকেলেই তিনি ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন
মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে আনলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় কেনেন। পরে শনিবার বিকেলেই তিনি ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন

দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট চান্দু মোল্লা মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী চান্দু মোল্লা জানান, পদ্মায় জেলে সিদ্দিকুর রহমানের জালে বিশাল আকারের বাগাড় ধরা পড়ার খবর পেয়ে ছুটে আসেন। বিক্রির জন্য রেজাউল মন্ডলের আড়তে নিলামে তোলা হলে ওজন দিয়ে দেখেন বাগাড়টি প্রায় ৫০ কেজি। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৫৫০ টাকা কেজি দরে ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় কেনেন মাছটি। পরে বিক্রির জন্য বাগাড়টি ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। বিকেলে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা করে লাভে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৮০ হাজার টাকায় ঢাকার উত্তরার এক ব্যবসায়ীর কাছে তিনি বিক্রি করেন। এত বড় বাগাড় মাছ এ বছর প্রথম নদীতে ধরা পড়েছে বলে তিনি জানান।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি অব্যাহত আছে। নিলামে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় বাগাড় বিক্রি হলেও আইনত কোনো পদক্ষেপ নজরে আসেনি।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা সম্প্রতি বলেন, ‘খাবারের খোঁজে বা প্রজনন মৌসুম হওয়ায় বাগাড় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বাগাড় শিকার ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এমনটি নেই। এ কারণে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না। তবে ইচ্ছা করলে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.