নেপালে ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব নিয়ে সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। এ ছাড়া অপর্যাপ্ত ত্রাণ নিয়েও সমালোচনা চলছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ২৭ জন। চার হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দুর্গত অনেক এলাকার মানুষ এখনো ত্রাণের অপেক্ষায় আছেন। তাঁরা সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
রাজধানী কাঠমান্ডুর পূর্বাঞ্চলের একটি জেলার এক গ্রামের বাসিন্দা মীরা কেসি। তিনি বলেন, তাঁদের গ্রামে আসার জন্য কোনো সড়ক সচল নেই। কেউ ত্রাণ নিয়েও আসেননি।
সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে মীরা বলেন, ইতিমধ্যে অনেক মানুষ মারা গেছেন। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকার এখন যা করবে, সেটা হলো শোক প্রকাশ।
কাঠমান্ডুর নদী–তীরবর্তী একটি বস্তির বাসিন্দা মান কুমার রানা (৪৯)। তিনি বলেন, ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় প্রতিবেশীসহ তাঁকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাড়ি ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সেখান থেকে চলে আসতে বাধ্য করা হয়েছে।
মান কুমার আরও বলেন, সরকার যদি রাজধানীর এত কাছে থাকা গরিব মানুষদের দেখভাল করতে না পারে, তাহলে প্রত্যন্ত এলাকায় অন্যদের কীভাবে দেখবে?
জলবায়ুবিশেষজ্ঞ অরুণ ভক্ত শ্রেষ্ঠা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বন্যা নিয়ে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি।
উদ্ধার কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা গেছে বলে জানান নেপালি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ মান বাহাদুর থাপা। তিনি বলেন, সমন্বয় ও সম্পদের মধ্যকার ঘাটতি উদ্ধার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা দেখা যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন দুর্যোগের মাত্রা ও ব্যাপকতা বাড়ছে।
এএফপি, কাঠমান্ডু