কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে নিজেদের সেরা ছন্দে নেই ব্রাজিল দল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসেও সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। অক্টোবরের আগে চার ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখেও পড়েছিল ভিনি-রদ্রিগোরা। তবে শেষ দিকে কয়েকটি ম্যাচ জিতে বছর শেষ করেছে তারা।
তবে চলতি বছর বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করায় একমাত্র লক্ষ্য ভিনি-রাফিনিয়াদের। সেই লক্ষ্যে মার্চের শেষ দিকে কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে ব্রাজিল। আর দুই ম্যাচকে সামনে রেখে ৫২ সদস্যের একটি প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছেন কোচ দরিভাল জুনিয়র।
যেখানে জায়গা পেয়েছেন নেইমার জুনিয়র। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরলেন ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা ফরোয়ার্ড। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রাজিলের হয়ে শেষবার মাঠে নামার পর লিগামেন্টের ইনজুরির কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। ইনজুরির ধাক্কায় সৌদি ক্লাব আল হিলালও তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে।
এরপর শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে যান নেইমার। চলতি মৌসুমে সান্তোসের হয়ে ৬ ম্যাচে ২ গোল করেছেন তিনি। ধীরে ধীরে ফিটনেস ফিরে পাওয়ায় কোচ দরিভাল জুনিয়রও তাকে ব্রাজিল দলে রেখেছেন।
৫২ সদস্যে এই দলে আরেক চমক অস্কার। ২০১১ সালে অভিষেকের পর ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্রাজিল দলে খেলেন অস্কার। ২০১৪ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে নজরে এসেছিলেন তিনি। ভবিষ্যৎ ‘কাকা’ বলা হতো তাকে। কিন্তু কোনো এক অজানা করণে ব্রাজিল দল থেকে হারিয়ে যান অস্কার। তবে দীর্ঘ ৯ বছর পর আবারও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন তিনি।
দীর্ঘদিন পর সুখবর মিললেও অস্কার শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলতে পারবেন কি না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ৫২ সদস্যের প্রাথমিক দল থেকে ২৩ জনের চূড়ান্ত দল বাছাই করবেন। আগামী ৭ মার্চ চূড়ান্ত দল ঘোষণা করা হবে। সেই দলে সুযোগ পেতে হলে অনুশীলনে অস্কারকে কোচের মন জয় করতে হবে।
বাছাইপর্বে আগামী ২১ মার্চ ব্রাজিল নিজেদের মাঠে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে। পয়েন্ট টেবিলে ব্রাজিলের ঠিক ওপরেই আছে কলম্বিয়া। এই ম্যাচের পর ২৬ মার্চ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়বে ব্রাজিল। এই মহারণটি অনুষ্ঠিত হবে আর্জেন্টিনার এস্তাদিও মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে।
একনজরে ব্রাজিলের ৫২ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড
গোলরক্ষক: অ্যালিসন (লিভারপুল, ইংল্যান্ড), বেন্টো (আল-নাসর, সৌদি আরব), এডারসন (ম্যানচেস্টার সিটি, ইংল্যান্ড), হুগো সুজা (করিন্থিয়ানস), লুকাস পেরি (লিয়ন, ফ্রান্স) ও ওয়েভারটন (পালমেইরাস)।
ডিফেন্ডার: আলেসান্দ্রো (লিলে, ফ্রান্স), বেরালদো (প্যারিস সেন্ট-জার্মেই, ফ্রান্স), দানিলো (ফ্ল্যামেঙ্গো), ফ্যাব্রিসিও ব্রুনো (ক্রুজেইরো), গ্যাব্রিয়েল ম্যাগালহায়েস (আর্সেনাল, ইংল্যান্ড), লিও অরটিজ (ফ্ল্যামেঙ্গো), মারকুইনহোস (প্যারিস সেন্ট-জার্মেই, ইংল্যান্ড) ও মুরিলো (ইংল্যান্ড)।
ফুল-ব্যাক: আবনার (লিয়ন, ফ্রান্স), অ্যালেক্স স্যান্ড্রো (ফ্লামেঙ্গো), অ্যালেক্স টেলেস (বোটাফোগো), ডোডো (ফিওরেন্টিনা, ইতালি), ডগলাস স্যান্টোস (জেনিট, রাশিয়া), গুইলহার্মে আরানা (অ্যাটলেটিকো মিনিরো), ওয়ান্ডারসন (মোনাকো, ফ্রান্স) ও ওয়েসলি (ফ্লামেঙ্গো)।
মিডফিল্ডার: অ্যালিসন (সাও পাওলো), আন্দ্রে (উলভারহ্যাম্পটন, ইংল্যান্ড), আন্দ্রেস পেরেইরা (ফুলহ্যাম, ইংল্যান্ড), আন্দ্রে সান্তোস (স্ট্রাসবার্গ, ফ্রান্স), ব্রুনো গুইমারেস (নিউক্যাসল, ইংল্যান্ড), এডারসন (আটালান্টা, ইতালি), গেরসন (ফ্ল্যামেঙ্গো), জোয়াও গোমেস (ইংল্যান্ড), জোয়াও গোমেস (উল্ভারহ্যাম্পটন), ইংল্যান্ড), লুকাস পাকেতা (ওয়েস্ট হ্যাম, ইংল্যান্ড), ম্যাথিউস কুনহা (উলভারহ্যাম্পটন, ইংল্যান্ড), নেইমার (সান্তোস) ও অস্কার (সাও পাওলো)।
ফরোয়ার্ড: অ্যান্টনি (রিয়াল বেটিস, স্পেন), ব্রুনো হেনরিক (ফ্লামেঙ্গো), এনড্রিক (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন), এস্তেভাও (পালমেইরাস), গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি (আর্সেনাল, ইংল্যান্ড), গ্যালেনো (আল-আহলি, সৌদি আরব), ইগোর জেসুস (বোটাফোগো), ইগোর পাইক্সাও (ইংল্যান্ড), এনড্রিক (ইংল্যান্ড), এনড্রিক (ইংল্যান্ড) এটা, রাশিয়া), রাফিনহা (বার্সেলোনা, স্পেন), রড্রিগো (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন), স্যামুয়েল লিনো (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, স্পেন), সাভিনহো (ম্যানচেস্টার সিটি, ইংল্যান্ড), ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন) ও ইউরি আলবার্তো (করিন্থিয়ানস)।