আরব সাগরে গত শনিবার থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’ ধীরে ধীরে শক্তি অর্জন করছে। ওই ঝড়ের রেশে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ভারত-বাংলাদেশের আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়ে গেছে। একটি ঘূর্ণিঝড়ের রেশ কাটতে না কাটতে এবার বঙ্গোপসাগরও উত্তাল হয়ে উঠেছে।
সাগরের পশ্চিম-মধ্য এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়াবিদেরা আশঙ্কা করছেন, এটি কাল সোমবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘হামুন’।
তবে এটি বাংলাদেশ বা ভারতের উপকূলের দিকে আসবে, নাকি দুর্বল হয়ে সাগরে মিলিয়ে যাবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদেরা। কিন্তু আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে একযোগে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ভারত হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি ঝরবে, তা নিশ্চিত করে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি আজকের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে এটি আগামীকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও তা আদৌ হবে কি না, এটি আজকের বাকি সময়ের পরিস্থিতির ওপরে নির্ভর করছে।’
বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এর প্রভাবে এরই মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ রোববার দুপুরের দিকে রাজধানীতে একপশলা বৃষ্টি হয়েছে। তা সামনে আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, নিম্নচাপের অগ্রভাগে থাকা মেঘমালা বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছে। আজ বিকেল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলায় বৃষ্টি বেশি হতে পারে। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগেও এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছরের মে মাসে প্রথম ঘূর্ণিঝড় মোখা দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে প্রভাব ফেলে। গত বছরও আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশে উঁচু জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে প্রভাব ফেলে। ঘূর্ণিঝড় হামুন সৃষ্টি হলে এটি হবে বছরের দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা থেকে সাধারণত বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগরসহ বিশ্বের বিভিন্ন সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর আগাম নাম ঠিক করা হয়। ‘হামুন’ নামটি দিয়েছেন ইরানের আবহাওয়াবিদেরা। পারসি শব্দ ‘হামুন’ মানে ছোট্ট দৈত্য। বিপর্যয় সৃষ্টিকারী শক্তি, মরুঝড় ও বড় বিপদের প্রতীকী অর্থেও ‘হামুন’ ব্যবহৃত হয়।