মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ইবাদতের সেই বোলিং গত বছরের সেরা

0
116
মাউন্ট মঙ্গানু্ই টেস্টে দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন ইবাদত

ইএসপিএনক্রিকইনফোর এই স্বীকৃতি পাওয়ার দৌড়ে ইবাদতের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বেশ কয়েকজন। গত বছর মার্চে লাহোর টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্সের ৫৬ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার সেই স্পেল। ৩ উইকেটে ২১৪ থেকে পাকিস্তান ২৬৮ রানে অলআউট হয়েছিল কামিন্সের আগুনে পুড়ে। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী নিউজিল্যান্ডের ম্যাট হেনরি।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ইবাদত

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ইবাদত

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটি হেনরির ২৩ রানে ৭ উইকেট নেওয়ার বিধ্বংসী স্পেলের জন্য। কিন্তু ইবাদতকে তাঁরা ছাপিয়ে যেতে পারেননি। উইকেট নিয়ে ‘স্যালুট’ করে উদ্‌যাপনের জন্য খ্যাতি পাওয়া এ পেসারের বোলিংকে গত বছর টেস্টের সেরা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে একরকম ‘স্যালুট’ই তো করল ইএসপিএনক্রিকইনফো!

উইজডেনের ওয়েবসাইটে গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত সেই রিভিউয়ে ইবাদতকে নিয়ে লেখার শুরুটা ছিল এমন, ‘ইবাদত হোসেন দ্রুততম বোলার নন, সুইংও খুব বেশি নয়, আর উচ্চতাও ৬ ফুট না। কিন্তু কখনো কখনো এমন হয়, দুর্দান্ত একটি টেস্ট স্পেল করতে এসবের কোনোকিছুরই দরকার পড়ে না। কখনো কখনো জীবনে সবরকম অবিচার সহ্য করার পর পরিশ্রম ও ধৈর্যের ফল মেলে।’ আর ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে, ইবাদতের সেই স্পেলকে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলিং স্পেল বলা হয়েছে।

কিছু তথ্যপঞ্জিতেও ক্রিকইনফো বুঝিয়ে দিয়েছে, ইবাদতের সেই স্পেলের গুরুত্ব কতটা। ২০১৩ সাল থেকে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে (১ জানুয়ারি–৫ জানুয়ারি) সেই টেস্টের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের কোনো ফাস্ট বোলার ৫ উইকেট পাননি। ইবাদতের সেই স্পেল দিয়ে খরাটি কাটে। আর মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের আগে এই সংস্করণে ইবাদতের বোলিং গড় ছিল ৮১.৫৪। সেই টেস্টের পর বোলিংগড় নেমে আসে ৫৬.৮৭ তে। সেই টেস্টে বাংলাদেশের সব পেসার মিলে নিয়েছিলেন মোট ১৩ উইকেট। টেস্টে এক ম্যাচে বাংলাদেশের পেসারদের এটাই সেরা সাফল্য। সেখানে ইবাদতের নিজের অবদান ছিল ৭ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।

ইবাদতের দুর্দান্ত বোলিংয়েই টেস্টটি জিতেছিল বাংলাদেশ

ইবাদতের দুর্দান্ত বোলিংয়েই টেস্টটি জিতেছিল বাংলাদেশ

সেই টেস্টের আগে সময়টা ভালো যায়নি বাংলাদেশ দলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরে ইনিংস ব্যবধানে হারসহ আরও কিছু টেস্ট হেরে বিপর্যস্ত ছিল বাংলাদেশ। সঙ্গে যোগ হয় করোনাভাইরাস মহামারির জন্য ‘জৈব সুরক্ষাবলয়’–এ একটানা থাকার মানসিক ক্লান্তি। কিন্তু মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে চার ফিফটিতে প্রথম ইনিংসেই ১৩০ রানের লিড পেয়ে যায় বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ১৬৯ রানে অলআউট হয়েছিল ইবাদতের বিধ্বংসী সেই স্পেলে।

এরপর মাত্র ৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটের অবিষ্মরণীয় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। জয়ের পর ইবাদতকে নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেছিলেন, ‘ইবাদত ভালো বোলিং করায় অবাক হইনি। আমি জানতাম এবং (দলের) আরও অনেকেই জানত, যেদিন সে ভালো করবে প্রতিপক্ষ শেষ হয়ে যাবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.