নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, অসহায় ক্রেতারা

0
107
ডিম মুরগী এলাচ
লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না। বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতে চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ ছাড়া অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ডিম ও মাংসের বাজারেও। এদিকে কোরবানির ঈদের বাকি আরও প্রায় দেড় মাস। এর মধ্যেই মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী।
 
বিক্রেতারা জানান, তীব্র গরমের কারণে ব্যহত হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা। এতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে পণ্যের। আর ক্রেতারা বলেন, এ বছর রোজার আগে থেকেই বেড়েছে পণ্যের দাম। কিন্তু ঈদের পরও সেই দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাপ বাড়ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সংসারে। অসহায় ক্রেতাদের এখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। ব্যবসায়ীরাও বুঝে গেছে, দাম বাড়ালেও পণ্য কিনবে সাধারণ মানুষ। তাই খেয়াল-খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে পণ্যের।
 
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৮০-৯০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ধুন্দল ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, আলু ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
দাম চড়েছে কাঁচা মরিচেরও। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ৭০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে মাছের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ১০০ টাকা।
 
এদিকে স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।
 
ঈদের আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙাশের দাম ছিল ১৮০-২২০ টাকা, সেই একই পাঙাশ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়া মাছের কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাঝারি ও বড় মানের তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৮০ টাকায়। ঈদের আগে যা ছিল ২২০-২৫০ টাকা। চাষের কই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকার ওপরে। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই মাছের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বড়গুলো ৩৬০-৪০০ টাকা। বাজারে ইলিশের সরবরাহ তেমন নেই। ৪০০-৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০-১৪০০ টাকা।৭০০-৮০০ গ্রাম হলে ১৬০০-১৮০০ টাকা। আর কেজি সাইজের হলে দাম দুই হাজারের ওপরে।
 
এদিকে কোরবানির ঈদের বাকি আরও প্রায় দেড় মাস। এর মধ্যেই মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে এলাচির দাম বাড়ছে লাফিয়ে। এ ছাড়া অন্যান্য মসলার মধ্যে দারুচিনি, লবঙ্গ, ধনে, তেজপাতা, শুকনা মরিচ ও হলুদের দামও গত বছরের তুলনায় বাড়তি। কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। তাই কোরবানিকে সামনে রেখে আগেভাগেই বাজারে মসলার দাম বেড়ে গেছে।
 
মসলার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে এলাচির দাম। দুই মাস আগে প্রতি কেজি এলাচির দাম ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। খুচরায় এখন তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এলাচির দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। এলাচির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে আমদানিকারকেরা বলছেন, বিদেশে এলাচির দাম বেড়েছে। এ ছাড়া ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচও বেড়ে গেছে। সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ বলছেন, আমদানি করা এলাচি কয়েক হাত বদলের পর খুচরায় এসে দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে। আমদানিকারক থেকে নিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ী এলাচি মজুত করে বেশি মুনাফা করছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.