নাশকতা খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি

সাম্প্রতিক ছয় অগ্নিকাণ্ড

0
199
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ড

সাম্প্রতিক কয়েকটি বড় আগুনের ঘটনার তদন্তে কোনো পক্ষের জড়িত থাকা বা নাশকতার খোঁজ পাওয়া যায়নি। বরং তদন্ত কমিটিগুলো বলেছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগ বা অন্য কোনো কারণে এসব আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলে সংগঠিত ছয়টি আগুনের ঘটনার তদন্তের তথ্য কমিটিতে তুলে ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে তিনটি ঘটনায় বৈদ্যুতিক গোলযোগ এবং দুটি ঘটনায় প্রাকৃতিক মিথেন গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা ঘটার তথ্য দেওয়া হয়। অন্য একটি ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

রাজধানীর বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে গত এপ্রিলে এবং এর পরপর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতা আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহের কথা বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এমনকি সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে নাশকতার সন্দেহ করা হয়েছিল।

রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে
রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও গত মাসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তখন বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক আগুনের ঘটনাগুলোয় কোনো পক্ষ জড়িত কি না, তা অনুসন্ধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। গত বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে সাম্প্রতিক ছয়টি আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংসদীয় কমিটিতে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ এপ্রিল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে (দক্ষিণ) আগুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনেও অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কথা বলা হয়েছে। এর আগে ৭ মার্চ রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে কুইন্স টাওয়ারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদনে ওই ঘটনার কারণ হিসেবে ‘প্রাকৃতিক মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণ’ উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে ৫ মার্চ নিউ মার্কেট এলাকায় শিরিন ম্যানশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে এসেছে, প্রাকৃতিক মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি ও তা বাতাসের সঙ্গে মিশে ‘এক্সপ্লোসিভ মিক্সার’ তৈরি করে। এটা একপর্যায়ে বৈদ্যুতিক স্পার্ক (সুইচ অন বা অফ) অথবা জ্বলন্ত সিগারেটের কারণে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা ঘটায়।

এই ঘটনার আগের দিন ৪ মার্চ চট্টগ্রামের সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণে সাতজন নিহত হন। অনেকে আহত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব হাইড্রোকার্বন দীর্ঘদিন জমা হয়ে ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ বিশুদ্ধ অক্সিজেনের উপস্থিতিতে দাহ্য পদার্থের মতো আচরণ করতে পারে এবং সেখানেই আগুনের মূল সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি গুলশানে জাকের মোশাররফ স্কাইলাইন নামের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে বৈদ্যুতিক গোলযোগকে আগুনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য পীর ফজলুল রহমান বলেন, সংসদীয় কমিটির এর আগের বৈঠকে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, হঠাৎ ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতা বা কারণ আছে কি না। বুধবারের বৈঠকে মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক সময়ের কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে নাশকতার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

রিয়াদুল করিম

ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.