উচ্ছ্বসিত তাঁর হওয়ারই কথা, তিনি হয়েছিলেনও। তবে সেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে কিছুটা লাগাম হারিয়েছিলেন স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান লুইস রুবিয়ালেস। গতকাল ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো স্পেনের মেয়েরা বিশ্বকাপ জেতার পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে পদক নিতে আসা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হেনিফার হেরমোসোকে ঠোঁটে চুমু দেন রুবিয়ালেস।
এর পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা। প্রথমে অবশ্য সেসব সমালোচনা খুব একটা পাত্তা দেননি রুবিয়ালেস, উল্টো সমালোচকদের মূর্খও বলে দিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সম্ভবত বোধোদয় হয়েছে তাঁর। চুমু-কাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। স্বীকার করেছেন এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে এ রকম আচরণ করা ঠিক হয়নি তাঁর।
গতকাল ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে মেয়েদের বিশ্বকাপ জেতে স্পেন। জার্মানির পর মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে ছেলে, মেয়ে উভয় বিভাগে বিশ্বকাপ জিতল স্প্যানিশরা। শুধু তা-ই নয়, এ মুহূর্তে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ এবং অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নও তারা।
বৈশ্বিক আসরে স্প্যানিশদের এত এত সাফল্যে ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান হিসেবে রুবিয়ালেস ছিলেন বেশ উচ্ছ্বসিত। তবে সেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বেশ বিরক্তি কুড়িয়েছেন। বিশ্বকাপ জয়ের পর স্পেনের মেয়েদের উদ্যাপনের সময় বারবার ছবিতে পোজ দিতে ঢুকে যাওয়া, মেয়েদের হাত থেকে ট্রফি নিয়ে স্পেনের রানিকে দেওয়া, শেষে লকার রুমে ঢুকে হাসিঠাট্টা করা—এসব তো ছিলই। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তাঁর মিডফিল্ডার হেনিফার হেরমোসোকে ঠোঁটে চুমু দেওয়াটা।
এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ‘রেডিও মার্কা’কে রুবিয়ালেস প্রথমে বলেছিলেন, ‘হেনির সঙ্গে চুমু? মূর্খ লোকের তো অভাব নেই। দুজন মানুষের স্নেহপূর্ণ মুহূর্ত নিয়ে এসব মূর্খের কথা শোনার সময় নেই। আমরা চ্যাম্পিয়ন, আমি এটা নিয়েই আছি।’
তবে আজ নিজের ভুল স্বীকার করেছেন রুবিয়ালেস। আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে বলেছেন, ‘আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমি সম্পূর্ণ ভুল ছিলাম। আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে, এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাকে বুঝতে হবে, যখন সভাপতি সভাপতির মতো দায়িত্বে থাকবেন, আপনাকে আরও সতর্ক হতে হবে।’
গতকাল ওই ঘটনার পর স্পেন দল বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে উদ্যাপনের পর লকার রুমে গেলে ইনস্টাগ্রামে লাইভ করেন কেউ কেউ। সেখানে মঞ্চের ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে হেরমোসো বলেছিলেন, ‘আমার এটা ভালো লাগেনি।’ টুইটারে স্প্যানিশ সাংবাদিক ইরাতি ভিদার শেয়ার করা একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে দেখা যায়, হেরমোসোকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি তখন কী করছিলেন?’ জবাবে ৩৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমার কী করার ছিল?’