নাটোর শহরে প্রকাশ্যে এক যুবলীগ নেতার ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় নাজমুল শেখ ওরফে বাপ্পি (৩২) নামের ওই যুবলীগ নেতাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার রাত পৌনে আটটার দিকে শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় জেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ফটকে হামলার এ ঘটনা ঘটে। নাজমুল শেখ নাটোর শহর যুবলীগের সদস্য ও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি ও কার্ভাড ভ্যান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের অনুসারী হিসেবে রাজনীতি করেন। তাঁর বাড়ি কান্দিভিটুয়া মহল্লায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার পর গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় পাল্টাপাল্টি মহড়া এবং স্লোগান দেন। পুলিশের একাধিক গাড়ি তাঁদের পিছু পিছু ঘুরতে দেখা যায়। সহিংসতার আশঙ্কায় শহরের দোকানপাট দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নাটোর থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে নাজমুল শেখের ব্যক্তিগত কার্যালয় রয়েছে। গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে তিনি তাঁর কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় ছয় থেকে সাতজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। তিনি ডাকচিৎকার দিতে থাকলে আশপাশ থেকে শতাধিক মানুষ জড়ো হন। সবার সামনেই দুর্বৃত্তরা তাঁর দুই হাত-পাসহ সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কোপায়। একপর্যায়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে লোকজন নাজমুল শেখকে পাশেই নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাজমুলের ভাই ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি গোলাম রাব্বানী বলেন, তাঁর ভাই সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের অনুসারী। নাটোরের আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের অনুসারীরা তাঁর ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করেছেন।
তবে শরিফুল ইসলাম এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, নাজমুল শেখ একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বেশ কিছুদিন জেলও খেটেছেন। শুনেছেন, এলাকার জুনিয়রদের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটতে পারে। হেয় করার জন্য এ ঘটনার সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। শান্তি–শৃঙ্খলার স্বার্থে শহরে পুলিশ মোতায়েন আছে। কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।