নাইজেরিয়ায় আইএসের আস্তানায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

0
24
নাইজেরিয়ার রাস্তায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা, ফাইল ছবি: রয়টার্স

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আস্তানায় শক্তিশালী বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিনের’ রাতে এ অভিযান চালানো হয়।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন) বলেছে, ‘নাইজেরীয় সরকারের অনুরোধে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় একাধিক আইএস সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।’

হামলায় বেশ কয়েকজন আইএস সদস্য নিহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে।

পেন্টাগনের প্রধান পিট হেগসেথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে নাইজেরীয় সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে চালানো এই সফল অভিযানের প্রশংসা করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম যে তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা–ই ঘটেছে।’

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী ঈশ্বরের কৃপায় থাকুক। নিহত সন্ত্রাসীসহ সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা। যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা অব্যাহত থাকে, তবে ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক সন্ত্রাসী নিহত হবে।’

এদিকে নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ শুক্রবার ভোরে এক বিবৃতিতে বলেছে, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার স্থায়ী হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গড়ে তোলা নিরাপত্তা সহযোগিতায় নাইজেরিয়ার কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ড এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, তারা নাইজেরীয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সোকোতো রাজ্যে হামলা চালিয়েছে এবং এ ঘটনায় ‘একাধিক আইএসআইএস সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর এটিই প্রথম হামলা। এর আগে গত অক্টোবর ও নভেম্বরে ট্রাম্প পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাইজেরিয়ার চলমান সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে সেখানে খ্রিষ্টানরা অস্তিত্বের সংকট ও গণহত্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

এই কূটনৈতিক অবস্থান কারও কাছে সমাদৃত হলেও অন্যরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এমন অবস্থান আফ্রিকার জনবহুল দেশটিতে ধর্মীয় উত্তেজনা উসকে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কট্টর খ্রিষ্টানরা দীর্ঘদিন ধরে নাইজেরিয়ার চলমান সহিংস পরিস্থিতিকে ধর্মীয় নিপীড়ন হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছে। তবে নাইজেরিয়ার সরকার ও স্বাধীন বিশ্লেষকেরা এর বিরোধিতা করেন।

দেড় দশক ধরে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বোকো হারাম ও আইএসের সন্ত্রাসী তৎপরতায় অন্তত ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র ডাকাত দলগুলোর লুটতরাজ ও অপহরণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এএফপি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.