নাইক্ষ্যংছড়ির শূন্যরেখায় ফের গোলাগুলি, রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন

0
137
তুমব্রু সীমান্তে শুন্যরেখায় রোহিঙ্গা শিবির আগুনে পুড়ছে

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় ফের গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আগুনে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা শিবিরের প্রায় ৫শ’ ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে সেখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমানার ভেতরে আশ্রয় নেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা এলাকায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন স্থানীয় লোকজন। এর আগে বুধবার এই শূন্যরেখার মিয়ানমার অংশে দিনভর গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত এবং দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়।

এ বিষয়ে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালেও এখানে গোলাগুলি হয়েছে। আগুনে আমাদের শিবিরের ৬২১টি পরিবারের মধ্য প্রায় ৫শ’ বসতঘর পুড়ে গেছে। অধিকাংশ লোকজন মিয়ানমার সীমানার ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কিছু মানুষ বাংলাদেশ অংশেও আশ্রয় নেয়। মূলত শূন্যরেখা থেকে শিবিরটি উচ্ছেদ করতে একটি সশস্ত্র গ্রুপ আগুন ধরিয়ে দেয়।’

সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে শিবিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫শ’ রোহিঙ্গাদের বসতঘর পুড়ে যায়। ফলে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশে বেশ কিছু এলাকায় রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে।

বাংলাদেশ অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা। তিনি বলেন, ‘আজকে গোলাগুলির বিষয়টি আমার জানা নেই। তুমব্রু-সীমান্তের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শূন্যরেখায় হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনে আমাদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তবে শূন্যরেখা রোহিঙ্গা শিবিরে অধিকাংশ বসতঘর পুড়ে গেছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি।’

আগের দিন বুধবার এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘চার থেকে পাঁচজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়েছে। আমরা তাদের আটক করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাঁদের নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, তুমব্রুতে শূন্যরেখায় স্থাপিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২০১৭ সালের পর থেকে চার হাজার ২৮০ রোহিঙ্গা বসবাস করছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমার অংশে সে দেশের সেনাবাহিনী এবং স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষ চলে। ওই সংঘর্ষে মিয়ানমার অংশ থেকে মর্টার শেল তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে পড়ে। সে সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কয়েক দফা প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মর্টারশেল পড়ায় মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। তারা জানায়, ভুলবশত মর্টারশেল বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে পড়েছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.