উসাইন বোল্ট, মাইকেল ফেলপসের মতো অলিম্পিক কিংবদন্তির কাতারে চলে গেলেন কি লিওঁ মারশাঁ? ৪টি স্বর্ণ জেতার পর ফরাসি সাঁতারুকে ঘিরে এই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। মারশাঁ অবশ্য এত কিছু ভাবতে নারাজ। দুর্দান্ত একটি সপ্তাহ কাটানোর আনন্দেই মশগুল তিনি। এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে অলিম্পিক রেকর্ড করে স্বর্ণ জিতলেও অল্পের জন্য বিশ্বরেকর্ড মিস করেছেন। তবে সে আক্ষেপ মুছে যেতে পারে পঞ্চম স্বর্ণের আগমনে। গতকাল সকালে ৪ গুণিতক ১০০ মিটার মিডলে রিলেতে মারশাঁর নেতৃত্বে ফরাসি টিম সেরা টাইমিং করে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। রোববারের ফাইনালে নিশ্চিতভাবেই তারা ফেভারিট।
২০০ মিটার মিডলের অলিম্পিক রেকর্ডটি এতদিন মাইকেল ফেলপসের দখলে ছিল। ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে ১ মিনিট ৫৪.২৩ সেকেন্ড টাইমিং করে রেকর্ডটি গড়েছিলেন কিংবদন্তি সাঁতারু। মারশাঁ ১ মিনিট ৫৪.০৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে অলিম্পিক রেকর্ড করার পাশাপাশি এই ইভেন্টের ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা টাইমিং করেছেন। ২০০৮ সালে মাইকেল ফেলপসের পর মারশাঁ হলেন অলিম্পিকের এক আসরে ৪টি স্বর্ণ জেতা প্রথম পুরুষ সাঁতারু। রোববার রাতে রিলেতে স্বর্ণ জিততে পারলে সে ইতিহাস
আরও সমৃদ্ধ হবে।
ফরাসি এ সাঁতারু সুইমিং পুলে নামলেই স্বর্ণ তুলে আনছেন। তাঁর সেই স্বর্ণ জয় দেখতে শুক্রবার রাতে লা ডিফেন্স অ্যারেনাতে হাজির হয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। ২২ বছর বয়সী সাঁতারু সবার আগে টাচলাইন ছুঁতেই গ্যালারিতে মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে ছুড়ে লাফিয়ে ওঠেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। আর পুরো গ্যালারি ফ্রান্সের জাতীয় সংগীত ‘লা মার্সেইলাইজ’ গেয়ে ও তাঁর নামে স্লোগান দিয়েছে। মারশাঁ খুশি সবকিছু ঠিকঠাক হচ্ছে বলে, ‘মনে হয়, এ সপ্তাহে আমার কিছু ভুল হয়নি। নিখুঁত ছিল সবকিছু।’ ২০০ মিটার বাটারফ্লাই, ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোক ও ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে স্বর্ণ জয়ের পর শুক্রবার ফেভারিট হিসেবেই পুলে নেমেছিলেন মারশাঁ। এই ইভেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীনের ওয়াং সুন শুরুর বাটারফ্লাইয়ে লিড নিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাকস্ট্রোকে এগিয়ে যান মারশাঁ। এর পর আর কেউ তাঁকে পেছনে ফেলতে পারেনি। স্বাগতিক দর্শকদের গগনবিদারী হর্ষধ্বনিতে পরিষ্কার ব্যবধানে
জিতে নেন তিনি।
মারশাঁকে গড়ে তুলেছেন ফেলপসের সাবেক কোচ বব বোম্যান। স্বভাবতই শিষ্যর সাফল্যে ভীষণ খুশি যুক্তরাষ্ট্রের এ কোচ, ‘আমার চোখে সে শতভাগ সফল। তাঁর জন্য আমি ভীষণ গর্বিত। তবে সবকিছু এমন নিখুঁত করতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে।’ টোকিওর মতো প্যারিসেও এ ইভেন্টে রৌপ্য জিতেছেন ব্রিটেনের ডানকান স্কট। তাঁর মতে, মারশাঁ শুধু সাঁতার নয়, পুরো ক্রীড়া জগতের ‘পোস্টার বয়’ হয়ে উঠেছেন!